Breaking




Monday, 22 January 2024

একনজরে অযোধ্যা রাম মন্দির :: পটভূমি || একালা || স্থাপত্য || খরচ ও আরও অন্যান্য তথ্য

একনজরে অযোধ্যা রাম মন্দির :: পটভূমি || একালা || স্থাপত্য || খরচ ও আরও অন্যান্য তথ্য

একনজরে অযোধ্যা রাম মন্দির
একনজরে অযোধ্যা রাম মন্দির
রাম মন্দির হল একটি হিন্দু মন্দির যা রামায়ণ অনুযায়ী হিন্দু ধর্মের প্রধান দেবতা রামের জন্মস্থান ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রাম জন্মভূমির স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে। মন্দির নির্মাণের তত্ত্বাবধান করছে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র। এর ভিত্তিপ্রস্তরের অনুষ্ঠানটি ৫ আগস্ট ২০২০-এ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বারা সঞ্চালিত হয়েছিল, যার কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু মন্দির উদ্বোধনের জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের সাজ সজ্জা। মন্দরটি সকল দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ২২শে জানুয়ারী ২০২৪ তারিখে। এখন শুধু দিন গুনার অপেক্ষা। এখন আমরা দেখে নেবো মন্দিরটির সমস্ত বিশেষত্ব সম্পর্কে- 

পটভূমি :: 
দেবতা বিষ্ণুর অবতার রাম ব্যাপকভাবে পূজিত হিন্দু দেবতা। প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ অনুযায়ী রাম অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৬শ শতাব্দীতে মুঘলরা বাবরি মসজিদ নামক একটি মসজিদ নির্মাণ করে যা রাম জন্মভূমির স্থান তথা রামের জন্মস্থান বলে মনে করা হয়। ১৮৫০-এর দশকে এটি নিয়ে একটি সহিংস বিরোধ দেখা দেয়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ঘাত-প্রতিঘাত, অপেক্ষা, লড়াই, আন্দোলনের পর অযোধ্যা বিরোধে ২০১৯ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বিতর্কিত জমিটি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ভারত সরকার দ্বারা গঠিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ট্রাস্টটি অবশেষে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র নামে গঠিত হয়েছিল।

দেবতা :: 
বিষ্ণুর অবতার রামের শিশু রূপ রাম লালা বিরাজমান মন্দিরের প্রধান দেবতা। এছাড়া মন্দির ট্রাস্টের মতে মন্দির চত্বরে সূর্য, গণেশ, শিব, দুর্গা, বিষ্ণু ও ব্রহ্মাকে উৎসর্গ করা মন্দিরগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

একালা :: 
৭১ একর জমির উপর তৈরি হচ্ছে রাম লাল্লার নতুন আবাসস্থল। তাতে শুধু মন্দির তৈরি হয়েছে ২.৭৭ একর জমিরক উপরে। মূল মন্দিরকে ৬টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, তারমধ্যে রয়েছে গর্ভগৃহ যেখানে বসবে রাম লালার মূর্তি। মন্দিরের এলাকা অনুযায়ী প্রায় এক মিলিয়ন ভক্তদের আতিথেয়তা করার জন্য সজ্জিত করা যাবে।

খরচ :: 
এই বিশালাকার মন্দরটি নির্মাণ করতে খরচ হবে আনুমানিক ৩০০-৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু সমগ্র মন্দির চত্ত্বর  অর্থাৎ ৭১ একর জমির উপর কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। 

স্থাপত্য :: 
মন্দিরটির নকশা করেছেন প্রধান স্থপতি চন্দ্রকান্ত ভাই সোমপুরা, যার পিতামহ প্রভাকরজি সোমপুরা তার পুত্র আশীষ সোমপুরা সহ সোমনাথ মন্দিরের নকশা করেছিলেন। সোমপুরা উল্লেখ করেছেন যে রাম মন্দিরটি বাস্তুশাস্ত্রের নীতি অনুসরণ করে নাগারা শৈলীতে নির্মিত হচ্ছে এবং এটি উত্তর ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের গুজরা-চৌলুক্য শৈলীতে নকশা করা হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রয়াগ কুম্ভ মেলার সময় প্রস্তাবিত মন্দিরের একটি মডেল প্রদর্শন করা হয়েছিল।
আসন্ন মন্দিরটি ৩৬০ ফুট লম্বা, ২৩৫ ফুট চওড়া এবং ১৬১ ফুট উঁচু। মন্দিরের মূল কাঠামোটি একটি উঁচু মঞ্চের উপর নির্মিত হবে, এটা তিনতলা হবে। এতে গর্ভগৃহ ও প্রবেশের মাঝখানে পাঁচটি মণ্ডপ থাকবে, নৃত্য মণ্ডপ, রঙ্গ মণ্ডপ, গৃঢ় মণ্ডপ (সভা মণ্ডপ), প্রার্থনা মণ্ডপ, কীর্তন মণ্ডপ। সবচেয়ে উঁচু শিখরটি হবে গর্ভগৃহের উপরে। ভবনটিতে মোট ৩৬৬টি কলাম থাকবে। শিবের অবতার, ১০টি দশাবতার, ৬৪টি চৌসাথ যোগিনী ও দেবী সরস্বতীর ১২টি অবতার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিটি কলামে ১৬টি করে মূর্তি থাকবে। বিষ্ণুকে উৎসর্গকৃত মন্দিরগুলোর নকশার জন্য নিবেদিত শাস্ত্র অনুযায়ী গর্ভগৃহটি অষ্টভুজাকার হবে। মন্দিরে ১৬১ ফুট উচ্চতার পাঁচটি গম্বুজ এবং একটি টাওয়ার থাকবে। ৩ তলার মন্দিরটির একটি কেন্দ্র থাকবে, যাতে গর্ভগৃহে সূর্যের রশ্মি রাম লালার মূর্তির উপর পড়তে পারে।
  • মূর্তি :: শিশু রামের মূর্তিটি হবে ৫ ফুট উঁচু এবং কৃষ্ণ বর্ণের।
  • মন্দিরের ঘণ্টা :: মন্দিরের জন্য ৬ ফুট লম্বা এবং ৫ ফুট চওড়া বিশিষ্ট প্রায় ২,১০০ কেজির ঘণ্টা প্রস্তুত করা হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ২১ লক্ষ টাকা।
নির্মাতা :: 
লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো মূল কাঠামো তৈরির জন্য দায়ী। (টাটা কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স, সিবিআরআই, ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং আইআইটি- এর সহায়তায়)

আয়ুষ্কাল :: 
L&T এবং TCE দ্বারা পরীক্ষা করার পর অবশেষে, সেন্ট্রাল রিসার্চ বিল্ডিং ইনস্টিটিউটে ১০০০ বছরের এই এজেন্ডার জন্য স্থিতিশীলতা পরীক্ষা দিয়েছে।

শুভ উদ্বোধন :: 
২২শে জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যা রাম মন্দির উদ্বোধন করা হবে। যে উদ্বোধনে সাক্ষী থাকবে সমস্ত ভারতবাসী। 


No comments:

Post a Comment