Breaking




Thursday, 14 July 2022

রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বা পার্থক্য

 রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বা পার্থক্য

রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বা পার্থক্য
রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বা পার্থক্য
ডিয়ার একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার্থী..
আমরা আজকে তোমাদের জন্য রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের একটি খুবি ইম্পরট্যান্ট প্রশ্ন খুবি সহজ ভাবে শেয়ার করছি। তোমরা যারা উক্ত ক্লাসে পড়ছো তোমরা অতি অবশ্যই প্রশ্নটি ভালোভাবে মুখস্থ করে নাও।

রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বা পার্থক্য আলোচনা করো ?

উত্তর ঃ গার্নারের মতে, "রাষ্ট্র হল বহু সংখ্যক ব্যাক্তি নিয়ে গঠিত এমন একটি জন সমাজ যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এবং যার একটি শাসনব্যবস্থা আছে এবং যাহা বাহ্যিকশক্তি নিয়ন্ত্রন থেকে মুক্ত।"
অন্যদিকে ম্যাকাইভার বলেছেন, "সামাজিক সংঘ হল সেই ধরনের সামাজিক সমাজ গোষ্ঠী যা এক বা একাধিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গড়ে ওঠে।"
এই দুই সংজ্ঞার পরিপেক্ষিতে উভয়ের মধ্যে কতগুলি সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। 
--- সাদৃশ্য ---

 সমাজ বোধ ঃ উভয়েরই সৃষ্টি হয়েছে মানুষের সমাজ বোধ থেকে।

 সদস্য সংখ্যা ঃ রাষ্ট্রের যেমন অন্যান্য জনসমষ্ঠির প্রয়োজন তেমনি অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানেরও জনসমষ্ঠির প্রয়োজন।

 পরিচালক মণ্ডলী ঃ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যেমন সরকারের প্রয়োজন তেমনি সামাজিক সংগঠন গুলিও পরিচালনা করে পরিচালক মণ্ডলী।

 কর্তব্য ঃ অধিকার ভোগের বিনিময়ে নাগরিকদের যেমন রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য পালন করতে হয়, তেমনি প্রতিটি সংঘের সদস্যদেরও কর্তব্য পালন করতে হয়।

 শৃঙ্খলা ঃ রাষ্ট্রের সদস্য হিসাবে নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় আইনকানুন মেনে চলতে বাধ্য হয়, এইভাবে সংগঠনের সদস্যরা সংগঠন প্রণীত নিয়মকানুন মেনে চলে। 
---- বৈসাদৃশ্য ---- 

 উৎপত্তি ঃ সমাজের ঐতিহাসিক বিবর্তনের বিশেষ একটি স্তরে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। অন্যদিকে মানুষের স্বেচ্ছাকৃত পরিকল্পনার ফলেই সামাজিক প্রতিষ্ঠান সমূহ সৃষ্টি হয়।

 আকৃতি ঃ আক্রিতিগত দিকে রাষ্ট্রবিশাল, রাষ্ট্রের মস্তিক বলে পরিচিত সরকার গঠিত হয় বহু সংখ্যক মানুষকে নিয়ে। অন্যদিকে সংঘের নিয়ম কানুন স্বল্প সংখ্যক সদস্যকে প্রভাবিত করে।

 সদস্য পদ ঃ রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসকারী প্রায় সব মানুষই রাষ্ট্রের সদস্য রাষ্ট্রের সদস্য পদ বাধ্যতা মূলক কিন্তু সামাজিক সংঘের সদস্য পদ গ্রহণ করা বা না করা সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে।

 উদ্দেশ্য ঃ সর্বাঙ্গীণ জন কল্যানের জন্য রাষ্ট্রকে বহুমুখী উদ্দেশ্য পুরন করতে হয়, কিন্তু সামাজিক সংঘ সাধারণত একটি উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়। যেমন - মোহন বাগান ক্লাব খেলাধুলার উদ্দেশ্য নিয়ে গড়ে উঠেছে। 

 সদস্যপদ সংক্রান্ত পার্থক্য ঃ একজন ব্যাক্তি কেবল মাত্র একটি রাষ্ট্রের সদস্য হতে পারে, অন্যদিকে একজন ব্যাক্তি এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারে। যেমন কোনো ব্যাক্তি একই সাথে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিক হতে পারে না, কিন্তু মোহনবাগান ক্লাব রেডক্রশ সোসাইটির সদস্য হতে পারে। 

 ক্ষমতা ঃ রাষ্ট্রপ্রতির আইনকানুন অবজ্ঞা করলে কঠোর শাস্তি এমন কি গুরুত্বর অপরাধীকে মৃত্যু দণ্ডওদিতে পারে রাষ্ট্র, কিন্তু সংঘের সদস্যকে ওইরূপ শাস্তি দিয়ে যায় না।

 অনুমোদন ঃ রাষ্ট্রের সৃষ্টি কোনো সামাজিক অনুমদন বা উদ্যোগের উপর নির্ভর করে না, কিন্তু সামাজিক সংগঠন গুলি জন্ম হয়, রাষ্ট্রের অনুমদ উদ্যোগের মাধ্যমে।

 স্থায়িত্ব ঃ রাষ্ট্র একটি সামাজিক স্থায়ী প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা যতদিন থাকে ততদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রের মৃত্যু ঘটেনা, কিন্তু অন্যান্য সংঘ রাষ্ট্রের মতো স্থায়ী নয়, উদ্দেশ্য সিদ্ধ হলেই সেগুলির অবলুপ্তি ঘটে।

 উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় রাষ্ট্র ও অন্যন্য সামাজিক সংগঠনের মধ্যে মৌলিক প্রভেদ থাকলেও মানবজীবনের বিকাশে উভয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বার্কারের মতে , "রাষ্ট্রীয় জীবন ও সামাজিক জীবন পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্ক যুক্ত এবং এরা একে অপরের পরিপূরক।"
------ ধন্যবাদ -----

আরও পোস্ট দেখো ঃ 

No comments:

Post a Comment