Breaking




Tuesday 14 June 2022

ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো

 ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো 

ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো
ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো 
ডিয়ার পরীক্ষার্থী.. .. 
আজ তোমাদের দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ের সপ্তম অধ্যায়ের ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করবো। তোমরা অবশ্যই এই প্রশ্নটি মন দিয়ে দেখে নাও এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উক্ত প্রশ্নটি প্র্যাকটিস করতে শুরু করে দাও।

❐  ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি আলোচনা করো।

উত্তর ঃঃ ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরী অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষমতা। ভারতের রাষ্ট্রপতির হাতে তিন ধরনের জরুরী অবস্থাকালীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৩৫২ থেকে ৩৬০ নং ধারায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। নিম্নে সেই জরুরী অবস্থা গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
 
০১. জাতীয় জরুরী অবস্থার ঘোষান (৩৫২ নং ধারা) ঃ- যুদ্ধ, বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘটলে বা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিলে রাষ্ট্রপতি জরুরী অবস্থার ঘোষণা করতে পারে। তবে ক্যাবিনেটের লিখিত সুপারিশ ছাড়া রাষ্ট্রপতি এরূপ জরুরি অবস্থার ঘোষণা করতে পারেন না। এরূপ ঘোষণাকে পার্লামেন্টের নিকট ১ মাসের মধ্যে উপস্থিত করতে পারে। পার্লামেন্টের উভয় পক্ষের মোট সদস্যের সংখ্যা গরিষ্ঠতা এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের ২-৩ অংশের সমর্থন লাভ করলে জাতীয় জরুরি অবস্থা ৬ মাস পর্যন্ত বলবৎ ঘটতে পারে। এরপর প্রয়োজন মনে করলে পার্লামেন্ট মনে করলে পুনরায় ৬ মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে। সর্বাধিক কত দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায় তা সংবিধানে উল্লেখ নেই। এখনও পর্যন্ত মোট তিনবার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয়েছে।
---- ফলাফল ----
রাজ্য তালিকা ভুক্ত যে কোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রনয়ন করতে পারে।
 লোকসভার কার্যকাল আরও এক বছর বাড়ানো যায়।
 শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার গুলিকে প্র্যজনীয় নির্দেশ দিতে পারে।
 রাজস্ব বণ্টন সংক্রান্ত বিধি ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অনুযায়ী পরিবর্তন করা যেতে পারে।
 
০২. রাজ্যের শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থার ঘোষণা (৩৫৬ নং ধারা) ঃ- ভারতের যে কোনো রাজ্যের রাজ্যপালের রিপোর্টের ভিত্তিতে অথবা অন্য কোনো ভাবে রাষ্ট্রপতি যদি 'সন্তুষ্ট' হন, সেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে রাজ্য সরকার সংবিধান অনুসারে শাসনকার্য পরিচলনা করছে না, সে ক্ষেত্রে তিনি সেই রাজ্যে শাসনতান্ত্রিক অচলঅবস্থা ঘোষণা করতে পারে। এরূপ ঘোষণাকে পার্লামেন্টের নিকট ২ মাসের মধ্যে উপস্থাপিত করতে হয়, অনুমোদিত হলে এই জরুরি অবস্থা প্রথমে ৬ মাস এবং পার্লামেন্টে পুনরায় অনুমোদন করলে আরও ৬ মাস অর্থাৎ সর্বাধিক ১ বছর বলবৎ থাকবে। তবে কোনো রাজ্য নির্বাচনের অনুকুল অবস্থা না থাকলে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করা যায়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১২০ বার এরূপ রাজ্যের শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা ঘোষিত হয়েছে।
---- ফলাফল ----
 রাজ্য আইন সভাকে বরখাস্ত করতে কিংবা ভেঙে দিতে পারে।
 রাজ্য আইনসভার যাবতীয় ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে অর্পণ করতে পারে।
 রাজ্যরা রাজ্য সমুহের জন্য বাজেট এবং অর্থবিল পার্লামেন্ট পাস।
 
০৩. আর্থিক জরুরি অবস্থার ঘোষণা (৩৬০ নং ধারা) ঃ- সমগ্র ভারত বা ভারতবর্ষের যে কোনো অংশের আর্থিক স্থায়িত্ব বা সুনাম বিপন্ন হয়েছে বলে। রাষ্ট্রপতি যদি সন্তুষ্ট হন তা হলে তিনি আর্থিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে, এরূপ ঘোষণাকেই পার্লামেন্টের ২ মাসের মধ্যে উপস্থাপিত করতে হয়। পার্লামেন্টের অনুমতি পেলেও এই জরুরি অবস্থায় জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ অনুরূপ হয়। এখনো পর্যন্ত ভারতের একবারও আর্থিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি।
---- ফলাফল ----
 কেন্দ্রিয় সরকার রাজ্য সরকার গুলিকে আর্থিক ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারে।
 কেন্দ্রিয় সরকার ও রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রভৃতি হ্রাসের নির্দেশ দিতে পারে।
 অর্থবিল সহ অন্যান্য যে কোনো বিল রাজ্য আইন সবা কর্তৃক গৃহীত হবার পর কেন্দ্রিয় সরকার রাষ্ট্রপতি অনুমোদনের জন্য পাঠাতে পারে।

উপসংহার ঃ- তত্ত্বগত ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে থাকলেও বাস্তবে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সমস্থ ক্ষমতার অধিকারী। বর্তমানে পার্লামেন্টের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অনুমতি ছাড়া কোনো ক্রমে জরুরি অবস্থা জারী করে রাখা যায় না।

---- ধন্যবাদ ----

No comments:

Post a Comment