একনজরে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম | Mobile operating system In Bengali
বর্তমানে আমরা যে সমাজে বসবাস করি সেটা হল ইন্টারনেটের সমাজ, বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক সবার কাছেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন আছে আমরা অনেকেই আছি যারা শুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতেই জানি কিন্তু সেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কি কি সিস্টেম থাকে বা সেই ফোন কি ভাবে পরিচালিত হয় আমরা সেই বিষয়ে কিছুই জানিনা। তাই আজকে তোমাদের সামনে উপস্থাপন করলাম মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।
সুতরাং আর সময় নষ্ট না করে জানার আগ্রহ লেবেল কে বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।
মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম
মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম এর একটি পার্সোনাল কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম এবং মোবাইল বা অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহারের উপযোগী বৈশিষ্ট্যগুলি একত্রিত করা হয়েছে । যেমন - অ্যান্ড্রয়েড , তাচ-স্ক্রিন , ব্ল্যুটুথ , ওয়াই-ফাই , ক্যামেরা ইত্যাদি। কয়েকটি জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম হল Android , Apple , iOS , Blackberry , Microsoft , Windows ইত্যাদি।
অ্যান্ড্রয়েড-
● অ্যান্ড্রয়েড হল লিনাক্স কার্নোলের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। বর্তমানে গুগল এবং অন্যান্য ওপেন হ্যাণ্ডসেট আল্যায়েন্স সদস্যরা অ্যান্ড্রয়েড উন্নয়ন এবং বাজারজাত করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রন করে।
● প্রথম বানিজ্যিকভাবে আত্মপ্রকাশ করা অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মাটফোনটি ছিল HTC Dream (২০০৮)
● অ্যান্ড্রয়েড হল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া স্মাটফোন অপারেটিং সিস্টেম।
● অ্যান্ড্রয়েড এই জনপ্রিয়তার কারন হল ১০ লক্ষেরও বেশি সহজলভ্য অ্যাপস যা গুগল প্লে বা অন্যান্য থার্ড পার্টি সাইট থেকে পাওয়া যায়।
অ্যাপস-
● অ্যাপস হল একধরনের সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন। স্মাটফোন বা ট্যাবলেটের বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য অ্যাপস ব্যবহৃত হয়।
● কিছু কিছু অ্যাপস স্মার্টফোনে আগে থেকেই উপস্থিত থাকে যেমন - Web Browser , Calender ইত্যাদি। কিছু কিছু অ্যাপস App Store বা Google Play-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে ডাউনলোড করে নিতে হয়। অ্যাপস চালু করাকে বলে installation , এবং অদরকারি অ্যাপসকে সরিয়ে দেওয়াকে বলা হয় uninstall করা, অ্যাপস চালু হয় ২০০৮ সালে।
অপটিক্যাল ফাইবার -
● অপটিক্যাল ফাইবার একধরনের সরু স্বচ্ছ তন্তু বিশেষ , সাধারণত কাচ দিয়ে তৈরি , যা আলো পরিবহনে ব্যবহৃত হয় । এর মাধ্যমে বেশি দূরত্বে অনেক কম সময়ে বিপুল পরিমাণ তথ্য পরিবহন করা যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের আরও অনেক সুবিধার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য - এই ব্যবস্থায় তথ্য পরিবহনে তথ্য ক্ষয় কম হয় , তড়িৎ চৌম্বকীয় প্রভাব থেকে মুক্ত ইত্যাদি।
● অপটিক্যাল ফাইবার টেলিফোন যোগাযোগের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়।এছাড়া আলোকসজ্জা , সেন্সর ও ছবি সম্পাদনার কাজেও ব্যবহৃত হয়।
গোরিলা গ্লাস-
● Corning নির্মিত একধরনের শক্ত কাচকে Gorilla Glass বলা হয়। স্মার্টফোনের স্ক্রিনের পর্দা তৈরিতে এই পাতলা , হালকা এবং ক্ষয়-প্রতিরোধক কাচটি ব্যবহৃত হয়।
● সাধারণত ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ক্ষারীয় পটাশিয়াম লবণকে গলিয়ে আবার জমাট বাঁধিয়ে এটি তৈরি হয়।
মেমোরি-
● RAM (Random Access Memory ) হল অস্থায়ী মেমোরি। অপারেটিং সিস্টেম এবং CPU RAM -কে কাজে লাগিয়ে অ্যাপস গোলোকে চালোনা করে ঠাকে। যত বেশি RAM থাকবে তত দ্রুত স্মার্ট ফোনটি কাজ করবে।
● স্মার্টফোনের নিজস্ব কিছু মেমোরি রয়েছে যাকে আমরা internal memory বলে থাকি । এতে ছবি , গান , ভিডিও ইত্যাদি সঞ্চয় করা যায়।
● স্মার্টফোনে অতিরিক্ত তথ্য রাখার জন্য external memory ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে । মাইক্রো -এসডি কার্ডের মাধ্যমে স্মার্ট ফোনের মেমোরি বাড়ানো সম্ভব।
● মেমোরি মাপা হয় MB (Megabyte) বা GB (Gigabyte) এককে।
এস ডি কার্ড-
● এস ডি কার্ড একধরনের মেমোরি কার্ড যেটি স্থায়ীভাবে তথ্য সঞ্চয় করতে সক্ষম । তিন রকমের এস ডি কার্ড হয় - Standard SD (32.0 ✕ 24.0 ✕ 2.1 mm) , Mini SD (21.5 ✕ 20.0 ✕ 1.4 mm) এবং Micro SD (15.0 ✕ 11.0 ✕ 1.0 mm)।
ওয়াই ফাই-
● Wi Fi (Wireless Fidelity) এমন এক প্রযুক্তি যেখানে বৈদ্যুতিক যন্ত্র গুলি WLAN-এর সাহায্যে Internet পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। Wi Fi পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত বা (Open) হতে পারে। Wi Fi কম বিস্তৃত স্থানে পরিষেবা দিতে সক্ষম।
ব্ল্যুটুথ-
● ব্ল্যুটুথ ক্ষুদ্র পাল্লার ওয়্যারলেস প্রটোকল। ব্ল্যুটুথের পাল্লা সর্বাধিক ১০ মিটার। তবে ব্যাটারির শক্তি বাড়িয়ে তা ১০০ মিটার পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভন।
● ব্ল্যুটুথ কাজ করে ২.৪৫ গিগাহার্টজ-এ।
● ডেনমার্কের রাজা Hardld Bluetooth -এর নামে এর নামকরণ।
● ব্ল্যুটুথ ১.০ -এর তথ্য বিনিময়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল সেকেন্ডে ১ মেগাবিট । বর্তমানে ব্ল্যুটুথ ২.০ -এর গতি সেকেন্ডে ৩ মেগাবিট।
● ব্ল্যুটুথ কম বিদ্যুৎ খরচ করে ক্ষুদ্র পাল্লার বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে একাধিক যন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে সক্ষম।
LTE এবং VOLTE -
● 4G বা ফোর্থ জেনারেশন টেকনোলজিকেই LTE (Long Term Evolution) নামে অভিহিত করা হয়।
● এতে মাত্র কয়েকশ মিলি সেকেন্ড তথ্য বিনিময় সম্ভব এতে প্যাকেট সুইচিং ব্যবহৃত হয় যেখানে বার্তাটিকে কয়েকটি টুকরো বা প্যাকেট ভাগ করা হয় এবং এক এক করে পাঠানো হয়।
● 2G বা 3G -র ক্ষেত্রে সার্কিট সুইচিং অর্থাৎ সমগ্র বার্তাটিকে একসঙ্গে পাঠানো হত ।
● VOLTE (Voice Over LTE) হচ্ছে 4G LTE -কে ব্যবহার করে এক ধরনের HD ভয়েস কলিং ব্যবস্থা যাতে আরো দ্রুত বার্তা পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
জিপিআরএস (GPRS)-
● GPRS (General Packet Radio Service) একধরনের তারবিহীন মোবাইল টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এতে প্রতি সেকেন্ডে ১১৫ কিলোবিট হারে তথ্য পরিবহণ সম্ভব।
● এটি অনেক বড় সীমার মধ্যে থেকে বিভিন্ন ব্যান্ডউইথ সমর্থন করে ।
● ক্ষুদ্র তথ্য গুচ্ছ সরবরাহের জন্য এই ব্যবস্থা বিশেষ কার্যকারী।
জিপিএস (GPS) -
● একসময় মানচিত্র , কম্পাস , স্কেল ইত্যাদির সাহায্যে ভূ-পৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হত।
● এখন বিজ্ঞানের উন্নয়ন ও নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনে এখন খুব সহজে ও নিখুত ভাবে পৃথিবীর কোনো স্থানের অবস্থান জনতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তার নাম GPS (Global Positioning System) যেটা গাড়ি, জাহাজ, প্লেন, কম্পিউটার, এমনকি স্মার্টফনেও ব্যবহার করা হয়।
হটস্পর্ট (Hotspot) -
● Hotsport হল এমন একটি নির্দিষ্ট জায়গা যেখানে Wi Fi প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া সম্ভব।
● মুলত একটি হটস্পর্ট Router -এর মাধ্যমে তৈরি করা হয় যা মুল সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত থেকে ডেটা সরবরাহ করে।
● বর্তমানে বিভিন্ন কফিশপ , রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে ব্যবহার করা হয়।
● প্রাইভেট হটস্পর্টের ক্ষেত্রে কোনো স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট অন্য স্মার্টফোন বা যন্ত্রকে একইভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারে।
আজকে তাহলে বন্ধুরা জানলাম মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে । তোমাদের পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই মতামত জানাবে।এই রকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট গুলি সবার আগে পেতে সাইটের উপরে দেওয়া টেলিগ্রাম ও Whatsapp লিঙ্কে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও। ধন্যবাদ , তোমার দিনটি শুভ হোক।
আরও পড়ুন- কম্পিউটার সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর PDF
No comments:
Post a Comment