Breaking




Saturday, 17 July 2021

স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান ।।

।। স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান ।।

স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান ।।


ডিয়ার ভিসিটর,
আজকে আমরা জানবো স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান । সুভাসচন্দ্র এমন একটা ব্যাক্তিত্ব যার নাম সুনলেই আমাদের যুব সমাজের মনে প্রতিবাদি মনভাবের সাহস জেগে ওঠে । যার জীবনী ও সংগ্রামের ইতিহাস আজও যুব সমাজকে উৎসাহিত করে । তাই আর দেরি না করে আসুন জেনে নিই সুভাসচন্দ্র বসুর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতি কথা  -
⩥ ১৯৪২ খ্রিঃ আগস্ট মাসে ভারতের যখন গান্ধিজির নেতৃত্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলন চলছিল , ঠিক তার পরেই ১৯৪৩ খ্রিঃ অক্টোবরে মাসে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগ্রাম ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ঝড় তোলে । সুভাসচন্দ্র অবদান গুলি নিম্নে আলোচনা করা হল -
(১) সুভাষচন্দ্রের দেশত্যাগঃ-ঃ- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত রক্ষক আইন দ্বারা সুভাষচন্দ্রকে নিজ গৃহে নজর বন্দি করে রাখা হয় । এমত অবস্থায় ১৯৪১ খ্রিঃ ১৭ই জানুয়ারি তিনি কলকাতা ত্যাগ করে কাবুলের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্থান হয়ে রাশিয়া পৌঁছান ।
(২) জার্মানিতে সুভাষচন্দ্রঃ- তিনি মস্কো থেকে ২৮শে মার্চ জার্মানিতে উপস্থিত হন । হিটলারের সহযোগীতায় ১৯৪২ খ্রিঃ আজাদ হিন্দ স্তান বেতার কেন্দ্রে স্থাপন করে । স্বাধীনতার জন্য প্রচার চালাতে থাকেন । জার্মানিতে বন্দি সৈন্যদের নিয়ে একটি সেনাদল গঠন করে । যারা তাঁকে নেতাজি বলে অভিবাদন করেন এবং জয় হিন্দ বলে অভ্যর্থনা জানান ।
(৩) আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব গ্রহনঃ-  ১৯৪২ খ্রিঃ ১৫ই জুন রাসবিহারী বসুর সভাপতিত্বে ব্যাংককে প্রবাসী ভারতীয়দের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এই আন্দোলনে ফল স্বরূপ আনুষ্ঠানিক ভাবে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠিত হয় । ১৯৪৩ খ্রিঃ ২৫ শে আগস্ট সুভাসচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহন করেন । সেনাবাহিনীর পুনঃ গঠনের কাজে হাত দেন ।
(৪) আজাদ হিন্দ সরকার গঠনঃ- ১৯৪৩ খ্রিঃ ২১শে অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন এবং ২৩শে অক্টোবর এই সরকার ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে , জাপান , থাইল্যান্ড , জার্মানি , ইতালি প্রভৃতি নয়টি রাষ্ট্র এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয় । এরপর জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো আন্দামান ও নিকোবর দ্বিপপুঞ্জে দুটি আজাদ হিন্দ সরকারের হাতে তুলে দেয় । ৩১শে ডিসেম্বর নেতাজি এই দুটি দ্বিপপুঞ্জের নাম রাখেন , "শহিদ ও স্বরাজ" দ্বীপ । 
(৫) দিল্লি চলো অভিজানঃ-  ১৯৪৪ খ্রিঃ ৮ই জানুয়ারি রেঙ্গুনে নেতাজি সামরিক দপ্তর স্থাপন করার পর আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারত অভিজান শুরু করেন এবং ধ্বনি তুলেন , ''দিল্লি চলো"। এই বাহিনীর বীরবিক্রমে মিপুরের কোহিমা শহর ও রাজধানী ইম্ফল দখল করে , এছাড়া এই সেনাদল ভারতীয় এলাকার প্রায় ১৫০ মাইল ব্রিটিশ শাসন মুক্ত করতে সক্ষম হন ।
(৬) আজাদ হিন্দ বাহিনীর আত্মসমর্পণঃ-  উক্ত সময়ে আমেরিকা , জাপান আক্রমন করলে জাপানি সেনাবাহিনী দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয় । এছাড়া নিদিষ্ট সময়ের পূর্বে বর্ষা শুরু হওয়ায় সৈন্যদের রসদ সরবরাহ করা সম্ভব ছিলনা , তাই ১৯৪৫ খ্রিঃ ১৫ই আগস্ট আজাদ হিন্দ বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং ওই বছরই ১৮ই আগস্ট নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় । অবশ্য এই কাহিনী সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ আছে -
গুরুত্বঃ- জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে আজাদ হিন্দ বাহিনীর গুরুত্ব অনস্বীকার্য । যেমন ঃ-
(ক) প্রয়োজনীয় রসদের অভাব ও প্রবল বাধা বিঘ্ন সত্বেও তার ১৫০ মাইল এলাকা স্বাধীন করতে সক্ষম হয় ।
(খ) তাদের কার্যকলাপ ব্রিটিশদের বুজিয়েদেয় তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে ।
(গ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর কার্যকলাপ দেশবাসীর মনে স্বাধীনতার আশার সঞ্চার করে ছিল ।
(ঘ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর দৃষ্টান্ত অনুসরন করে পরবর্তী কালে ১৯৪৬ খ্রিঃ নৌবিদ্রোহ শুরু হয় ।
(৭) রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ঃ- ছাত্র জীবন থেকে সুভাসচন্দ্র বসু ইংরেজ শাসন বিরোধী ছিলেন । তাই তিনি আই সি এস পরীক্ষায় চতুর্থস্থান অধিকার করে লোভনীয় চাকরি ত্যাগ করে দেশ মতাকে স্বাধীন করার জন্য দেশরঞ্জন চিত্ররঞ্জন দাসে অনুপ্রেরনা তিনি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে ।
(৮) ফরওয়ার্ড ব্লক গঠনঃ- ১৯২০ খ্রিঃ অসহযোগ আন্দোলন , ১৯২৩ খ্রিঃ স্বরাজ দলে আন্দোলন , ১৯২৭ খ্রিঃ সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন , ১৯৩০ খ্রিঃ আইন অমান্য আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলেন । সেই করেন ১৯৩৮ খ্রিঃ তিনি ফরিপুরা কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হয় । ১৯৩৯ খ্রিঃ দ্বিতীয় বা সভাপতি নির্বাচনে গান্ধীজী মনোনীত পট্টভি সীতা রামায়ানকে সভাপতি নির্বাচিত করেন । গান্ধিজির সাথে নেতাজির মনোমালিন্যের ফলে সুভাসচন্দ্র দলত্যাগ করেন । ১৯৩৯ খ্রিঃ ৩রা মে ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করেন ।

উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা জেনে নিলাম নেতাজি সুভাসচন্দ্র বসু স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিকথা । আশা করছি সহজ ও সুন্দর ভাবে আপনাদের সামনে সম্পূর্ণ বিষয়টি উপস্থাপন করতে পেরেছি । পোস্টটি কেমল লাগলো আপনাদের মতামত জানতে ভুলবেনা । ধন্যবাদ 

No comments:

Post a Comment