Breaking




Tuesday, 20 July 2021

ভারতে নৌবিদ্রোহ ।। Royal Indian Navy mutiny

 ভারতে নৌবিদ্রোহ ।। Royal Indian Navy mutiny

ভারতে নৌবিদ্রোহ ।। Royal Indian Navy mutiny
ভারতে নৌবিদ্রোহ ।। Royal Indian Navy mutiny
বন্ধুগন,
আজকে আমরা জানবো ভারতের খুবি একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে , আমরা জানবো ভারতে নৌবিদ্রোহ সম্পর্কে । আমরা জানবো বিদ্রোহের সূচনা , কারন , ফলাফল সম্পর্কে । যা আপনাদের সাধারন জ্ঞান বাড়াতে সাহায়্য করবে । 
➣ভুমিকা ঃ- ভারতের স্বাধীনতা আন্দলনের অন্তিম লগ্নের সর্বশেষে উল্লেখযোগ্য । আন্দোলন হল ১৯৪৬ খ্রিঃ নৌবিদ্রোহ । আজাদ হিন্দ ফৌজের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের পর ভারতীয় নাবিকদের অভ্যথান ও প্রতিবাদ ভার জাতীয় আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা যোগ করে , মার্কসবাদী ঐতিহাসিক রজনী দত্তের মধ্যে নৌবিদ্রোহ ভারতে ইতিহাসে এক নব্জুগের সুচনা করে ।
➣নৌবিদ্রোহের সূচনা
১৯৪৬ খ্রিঃ ১৮ই ফেব্রুয়ারি মুম্বাই তলোয়ার যুদ্ধে ১৫০০ নাবিক বিদ্রোহের সূচনা করে , বিদ্রোহীরা জাহাজের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করে , এবং তারা রয়েল ইন্দিয়ান নেভি -র নামে বদলে, "ইন্দিয়ান ন্যাশনাল  নেভি"-
➣প্রসার বা ব্যাক্তি ঃ-  ১৯টি বন্দের ২০ হাজার নাবিক ও করমি বিদ্রোহের , ক্রমে করাচী , কলকাতা , মাদ্রাজ , কোচিন , চট্টগ্রাম , বিশাখাপত্তনম প্রভৃতি স্থানে বিদ্রোহে ছাড়িয়ে পড়ে , ১০ লক্ষ শ্রমিক ২২ ফেব্রুয়ারি , মুম্বাই ধর্মঘটে যোগদান করে , পুলিশ ধর্মঘটীদের উপর গুলি চালালে রাজপথ রক্তাত্ব হয়ে উঠে , বিদ্রোহীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাংক , পোস্ট অফিস , পুলিশ , সামরিক বাহিনী ৪০ টি লড়ি ধ্বংস করে । এই সংঘর্ষ প্রায় ৩০০ লোক নিহত ২০০০ লোক আহত হয় ।
➣সরকারী দমননীতি ঃ- বিদ্রোহের দুর্বার গতি লক্ষ করে অ্যাডমিরাল গডফ্রে বিদ্রোহীর উদ্দেশ্যে একটি রাতা পাঠায় , যেখানে বলা হয় । বিদ্রোহীরা বিদ্রোহের অবসান না ঘটালে তাদের উপর বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হবে । এমতবস্থায় ব্রিটিশ সেনা বাহিনী বিদ্রোহীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । টানা ৭ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর মুম্বাইয়ের রাজপথ রক্তাক্ত রণক্ষেত্রে পরিনত হয় । তবে শেষ পর্যন্ত ২৩শে ফেব্রুয়ারি এই বিদ্রোহের অবসান ঘটে ।
➣জাতিয়নেতাদের ভুমিকা ঃ- নৌবাহিনীরা আশা করেছিলেন । জাতীয় নেতারা তাদের সাহায্য করবে । কেবলমাত্র কমিউনিস্ট পার্টি ও সমাজতন্ত্রী দল তাদের সমর্থন জানায় । অন্যদিকে জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নৌবাহিনী এই আন্দোলনে গান্ধিজির নাবিকদের কাছে ভারতীয় পক্ষে একটি অশুভ ও অশোভন দৃষ্টান্ত বলে নির্মাণ করেন । জিন্নার মতে নৌবিদ্রোহ একটি অসময়চিত ও দায়িত্ব জানহীন কাণ্ড বলেছেন । শেষ পর্যন্ত সদার বল্লভভাই প্যাটেল উভয়ের মধ্যে মধ্যস্থতা করিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করান ২৫শে ফেব্রুয়ারি ।
➣কারন
 নৌবিদ্রোহ কোনো আকর্ষিক ঘটনা ছিল না , কিন্তু এর পেছনে বেশকিছু কারন দায়ী ছিল , যথা - বর্ণ বৈষম্যের জন্য ভারতীয়দের ঘৃণা অবগ্রাস স্বীকার করা হত । ভারতীয় নৌসেনাদের তুলনায় ইংরেজ দৈর বেতন ছিল অনেক বেশি যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও ভারতীয় নাগরিকদের পদনতি হত না । ভারতীয় নাগরিকদের নিম্ন মানের খাবার সংগ্রহ করা হত । এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব , অভ্যন্তরীণ ঘটনা গুলির প্রভাব , আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রভাব, যা ভারতীয় নৌসেনাদের বিদ্রোহ করতে বাধ্য করে -
 ➣সেনাদের পদচ্যুতি ঃ-  ১৯৩৯ খ্রিঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে প্রচুর ভারতিয়কে নৌবাহিনীতে নিয়োগ করা হয় , কিন্তু যুদ্ধের পর অতিরিক্ত সেনার প্রয়োজন না থাকায় সরকার বহু সেনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে । এতে তারা বেকার হয়ে যায় । এর ফলে নৌবাহিনীতে ক্ষোভের সঞ্চার হয় ।
➣বিশ্ব-পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারনালাভ ঃ-  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় নৌসেনার বিদেশের বিভিন্ন যুদ্ধ ক্ষেত্রে যুদ্ধ করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে । বিদেশের পরিস্থিতির দ্বারা ভারতীয় সেনারা প্রভাবিত হলে এদেশে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ বেড়ে যায় ।
➣প্রত্যক্ষকারন ঃ- অ্যাডমিরাল গডফ্রে তলোয়ার নামক যুদ্ধ জাহাজটি পরিদর্শন করতে এলে ভারতীয় নৌকর্মচারীরা জাহাজের গায়ে , ইংরেজ ভারত ছাড়ো , জয়হিন্দ প্রভৃতি ধ্বনি লিখে রাখেন , ফলে ব্রিটিশরা বলাই দত্তকে গ্রেফতার করলে ১৯৪৬ খ্রিঃ ১৮ই ফেব্রুয়ারি নৌবিদ্রোহের সূচনা হয় ।
➣গুরুত্ব
 ➣ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘোষণা ঃ- নৌবিদ্রোহ যে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মৃত্যুর ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছিল তাতে সন্দেহ নেই , ভারতীয় সেনাদের উপর নির্ভর করে আর যে ভারত শাসন করা সম্ভব নয় , এ কথা ব্রিটিশ সরকার স্পষ্ট বুঝতে পারে , এককথায় , এই বিদ্রোহ ভারত ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘোষণা করে ।
  ➣মন্ত্রী মিশনের আগমন ঃ- নৌবিদ্রোহের ফলে আতঙ্কিত ইংরেজ সরকার শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হাস্তান্তরের জন্য কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের সঙ্গে আলোচনা করতে মন্ত্রী মিশনকে ভারতে পাঠায় । ১৮ই ফেব্রুয়ারি নৌবিদ্রোহ শুরু হয় এবং পরের দিন ভারতে মন্ত্রী মিশন পাঠানোর কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয় ।
 ➣ভারত ত্যাগের ভাবনা ঃ- কোনো কোনো ঐতিহাসিক বলেন , নৌবিদ্রোহ ভারতীয় সেনা ও সাধারন মানুষের রক্ত এক অভিন্ন আদেশ একসঙ্গে মিশে যায় । ভারতে এরুপ আরও একটি বিদ্রোহ শুরু হলে তার পরিনাম যে কি ভয়ংকর হবে তা বুঝতে পেরে ব্রিটিশ সরকার ভারত ত্যাগের কথা ভাবতে শুরু করে ।

⬛ উপরিউক্ত লেখাটি থেকে আমরা অতি সহজ এবং সুন্দর ভাবে নৌবিদ্রোহের সম্পূর্ণ বিষয়টি জানতে পারলাম । আপনাদের লেখাটি কেমন লাগলো অবশ্যই আপনাদের মতামত জানবেন । এবং আপনাদের যদি কোনো নোটের প্রয়োজন হয় সেটাও জানাবেন , আমরা যথাযথ চেষ্টা করবো আপনাদের সাহায্য করার । ধন্যবাদ 

No comments:

Post a Comment