Breaking




Sunday 11 July 2021

ভারতের সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায়েরঅবদান ।.।

 ভারতের সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান।

ভারতের সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায় ।

ডিয়ার ভিসিটর,
আজকে আমরা পড়বো এবং জানবো সমাজ সংস্কারক হিসাবে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান।  আমরা জানি রামমোহন রায় হুগলীর খানাকুলে ১৭৭২ সালে ২২শে মে জন্মগ্রহন করেন । বাঙ্গালী জাতিকে মধ্যযুগের গণ্ডী থেকে প্রকৃত আধুনিক যুগের ভাবধারা গ্রহন করতে শিখেছেন রাজা রামমোহন রায় । বাংলার শিক্ষা , সমাজ , সংস্কৃতি প্রভৃতির ক্ষেত্রে রামমোহন রায় যে প্রগতিশীল মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন তা বিস্ময়কর । কেবলমাত্র বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ রচনা করে বাঙ্গালীর হৃদয়ে জায়গা করে নেননি । সামাজিক নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এবং সংবাদ পত্রের সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাঙ্গালী জাতিকে চমকে দিয়েছিলেন । বলা যায় বাঙ্গালীর নবজাগরণের যে ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল , তার প্রধান ভুমিকা নিয়েছিলেন রাজা রামমোহন রায় ।
ঊনবিংশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত এক বিরল প্রতিভার মহাপুরুষ ছিলেন রাজা রামমোহন রায় । জাতির চরম সংকট জনক মুহূর্তে তাঁর আবির্ভাব হয় । তিনি দেবদ্রুতের মতো ক্ষয়ধরা ধর্মচিন্তা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে রুক্ষে দাঁড়িয়ে সমাজে একপ্রান শক্তি প্রদান করে । তাই তাঁকে ভারতের প্রথম ,' আধুনিক মানুষ ,' 'আধুনিক ভারতের জনক ' প্রভৃতি সম্মানে ভূষিত করা হয় । আমরা নিম্নে পড়বো তাঁর সমাজ সংস্কারক কাজ গুলি সম্পর্কে -
↫ ধর্মীয় সংস্কার ↬
রামমোহন রায়ের চরিত্রের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল তাঁর চিন্তার স্বচ্ছতা , দৃষ্টিভঙ্গির উদারতা , যুক্তিবাদী মননশীলতা প্রভৃতি । তিনি সমাজে প্রচলিত আচার অনুষ্ঠান , পুরোহিত তন্ত্র , কুসংস্কার , প্রভৃতি তাঁকে ব্যাথিত করেছিল । এই উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে বতি হন ।

➤ রামমোহনের ধর্মশ্বাধনার মুল ভিত্তি ছিল বেদান্ত ঃ-  তিনি একদিকে উপনিশদ ভিত্তি হিন্দু ধর্মের পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন এবং অন্যদিকে খ্রিস্টান মিশনারীদের আক্রমনের হাত থেকে হিন্দুধর্মকে রক্ষা করেন ।
(ক) তিনি প্রমান করার চেষ্টা করেন আচার সর্বস্বতা হিন্দুধর্মের মূল কথা নয় । একেশ্বরবাদই সকল ধর্মের মূলকথা । হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে উল্লিখিত নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম ।
(খ) রামমোহন রায় ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে বহুদেববাদের বিরুদ্ধে এবং একশ্বরবাদের সমর্থনে ''একশ্বরবাদীদের প্রতি'' নামে একটি পত্রিকা রচনা করেন , এছাড়া পাঁচটি প্রধান উপনিশদের বাংলা অনুবাদ রচনা করেন ।
(গ) ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারের আলোচনার জন্য কলকাতায় ১৮১৪ খ্রিষ্টাব্দে আত্মীয় প্রতিষ্ঠা করেন , এছাড়া আদর্শবাদী প্রচারের জন্য ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রহ্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন ।
↫ সমাজ সংস্কার ↬
সমাজসংস্কারক হিসাবে রাজ রামমোহন রায় এক আদর্শ সংগ্রামী । তিনি সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ  উদ্যোগ গ্রহন করেন , যথা -
(ক) হিন্দু সমাজে প্রচলিত সতীদাহ প্রথা , বাল্যবিবাহ , বহুবিবাহ , কন্যাপন , কৌলীন্য প্রথা , জাতীভেদ প্রথা , গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন প্রভৃতি বিভিন্ন কুপ্রথার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান ।
(খ) রামমোহন রায় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জনমত গঠন করতে থাকেন , শেষপর্যন্ত ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিং- এর সহায়তায় ১৭ নং অপরাধ বলে ঘোষণা করেন ।
(গ) নারীকে মর্যাদা সহকারে সমাজ গড়েতোলার বিষয়ে রামমোহনের যথেষ্ট উদ্যোগ নেন । সম্পত্তির অংশীদারীত্বে ও নারীর সমান অধিকার প্রসঙ্গে তিনি দাবী তুলেন ।
↫ শিক্ষার সংস্কার ↬
ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রেও রামমোহন রায় উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছেন । এক্ষেত্রে তিনি -
(ক) নিজ ব্যয়ে কলকাতায় ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে একটি অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন । বেদান্ত শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দে ''বেদান্ত কলেজ'' প্রতিষ্ঠা করেন 
(খ) স্কটিশ মিশনারি আলেকজান্ডার কে ' জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন ।
(গ) অনেকে মনে করেন ১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা করেন ।
(ঘ) সংবাদ পত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে একনতুন দ্বিগন্তের উন্মোচন করেন । তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য প্রত্রিকা হল - ' সম্বাদ কৌমুদী' 
 (ঙ) খ্রিস্টান মিশনারি দের যে কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামমোহন রায় তাঁকে প্রান পুরুষ বলেছেন।
↫ অন্যান্য সংস্কার ↬
ধর্ম , সমাজ ও শিক্ষা সংস্কার ছাড়াও তিনি একচেটিয়া বানিজ্যের অধিকার , চিরস্থায়ী বন্দবস্তের কুফল বিচার বিভাগের দুর্নীতি , জুরি প্রথার প্রবর্তন , প্রশারন , বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ প্রভৃতি বিষয়ে আলোকপাত করেন । তাই জওহরলাল নেহেরু তাঁকে , '' ভারতের জাতীয়তাবাদের জনক '' বলে অভিহিত করেছেন । 


➤ পোষ্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই Comment করে জানাবেন  এবং এই রকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের Website- ভিজিট করুন । ধ্যনবাদ 

2 comments:

  1. Thank you so much ❤️ sir,,,,, 😊😊 actually u r so great and your knowledge so much helpful to me ,not only me but also students

    ReplyDelete