Breaking




Tuesday, 21 May 2024

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ, ক্ষমতা ও কার্যাবলী

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ , ক্ষমতা ও কার্যাবলী

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ, ক্ষমতা ও কার্যাবলী
নমস্কার বন্ধুরা , 
আজকে আমরা জানবো আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে। আমরা জানবো প্রধানমন্ত্রী কি ভাবে নিয়োগ হন, তিনি কি কি ক্ষমতা ভোগ করেন, তিনি কি কি সুযোগসুবিধা পেয়ে থাকেন এবং তিনি কি ভাবে পদচ্যুত হন বা করা হয়। আসুন আর বেশি সময় নষ্ট না করে আমরা আসল বিষয়টা জেনে নিই ......
নিয়োগ , কার্যকাল ও বেতন

 সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন [৭৫ (১) নং ধারা]। তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রপতির ইচ্ছার ওপর প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ নির্ভর করলেও বাস্তবে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির কোনো '' স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা '' নেই। লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা মোর্চার নেতা বা নেত্রীকেই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীপদে নিয়োগ করতে বাধ্য থাকেন। তা না হলে শাসনক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল দেখা দেবে এবং সরকারের স্থায়িত্ব বিপন্ন হবে কিন্তু লোকসভায় কোনো দল বা মোর্চা একক - সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে রাষ্ট্রপতি নিজের মনোমতো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীপদে নিয়োগ করতে পারেন। অবশ্য সেক্ষেত্রেও ওই পদে নিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভা বা রাজ্যসভার সদস্য হতে হবে। পার্লামেন্টের কোনো কক্ষের সদস্য নন এমন কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীপদে নিযুক্ত হলে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে পার্লামেন্টের সদস্য হতে হয়, অন্যথায় তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যকালের সাধারন মেয়াদ ৫ বছর। অবশ্য এই সময়কাল শেষ হওয়ার পূর্বে লোকসভা ভেঙে দেওয়া হলে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ হ্রাস পায়। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী প্রতি মাসে ১,৬০,০০০ টাকা বেতন। তাছাড়াও তিনি অন্যান্য সুযোগ - সুবিধা পেয়ে থাকেন।

 ক্ষমতা ও কার্যাবলী

  গ্রেট ব্রিটেনের মতো ভারতের সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান হলেও প্রকৃত ক্ষমতা নিহিত থাকে প্রধান মন্ত্রির হাতে।

(১) লোকসভার নেতা ঃ- ভারতের প্রধানমন্ত্রী লোকসভার নেতা বা নেত্রী হিসাবে কাজ করে, লোকসভার অধিবেশন কখন আহূত হবে, কতদিন চলবে, কোন কোন বিষয়ের ওপর আলোচনা চলবে ইত্যাদি বিষয়ের উপর তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহনের অধিকারী। প্রয়োজন মনে করলে লোকসভা ভেঙে দেওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে পারেন, বিরোধী পক্ষের সঙ্গে যতখানি সম্ভব সদ্ভাব বজায় রাখেন, যাতে সভার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা যায়। সভার শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা রক্ষার ব্যাপারে তিনি স্পিকারকে সাহায্য সহযোগিতা করেন।

(২) মন্ত্রীসভার গঠনের ভূমিকা ঃ- প্রধানমন্ত্রী পরামর্শে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার সদস্য দের নিয়োগ করেন এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে কয়েকটি বিষয়ের ওপর দৃষ্টি রাখতে হয়।
01. নিজেদের নেতৃস্থানীয় লোকেরা যাতে মন্ত্রিসভায় স্থান পান।
02. মন্ত্রীসভার তপশিলি জাতি, উপজাতি, অনুন্নত সম্প্রদায়গুলির প্রতিনিধি যাতে স্থান লাভ করতে পারে।
03. ভবিষ্যতে দলকে নেতৃত্ব গ্রহনের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নিজদলের তরুন অথচ উদীয়মান নেতাদের তিনি মন্ত্রিসভায় স্থান দেন।
04. সমস্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও রাজ্যগুলি যাতে মন্ত্রিসভায় তাদের প্রতিনিধি প্রেরন করতে পারে।

(৩) ক্যাবিনেটের নেতা ঃ- ক্যাবিনেটের সভায় প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্বকরেন, ক্যাবিনেটের নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীকে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়।
01. প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমেই রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের নিয়োগ করে এবং পদচ্যুতি করতে পারেনক।
02. ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন এবং প্রয়োজনে পূর্ণ বণ্টন ও করে।
03. ক্যাবিনেটের নীতি নির্ধারণের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
04. ক্যাবিনেটের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে এবং ওই সব দপ্তরের সম্পাদিত কার্যাবলীর মধ্যে সংহতি তৈরি করেন।

(৪) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা ঃ- আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতে প্রধানমন্ত্রীকেই দেশের প্রতিনিধিত্বে করতে হয়, দেশে পররাষ্ট্রনীতি ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এছাড়া বিদেশি রাষ্ট্র প্রধানদের তিনি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে স্বাগত জানান, শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

(৫) নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা ঃ- রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে থাকেন, যেমন - বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি।

(৬) রাষ্ট্রপতির পরামর্শ দাতাঃ- রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মন্ত্রীসভার যোগসূত্র রচনা করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর  (৭৮ নং ধারা ) মন্ত্রীসভার যাবতীয় সিদ্ধান্ত সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত রাখা তাঁর কর্তব্য। কোনো রাজ্য রাষ্ট্রপতির শাসন দেশের জরুরি অবস্থায় ঘোষণা সামরিক বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ রাজ্যসভার সদস্য মনোনয়, প্রজাতন্ত্র দিবসে ক্ষেতাব বণ্টন ইত্যাদি বহুবিদ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

(৭) লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ঃ- সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাশীল হন। তাঁকে পার্লামেন্টের ভেতরে ও বাইরে সদা সর্বদা দলের মোর্চার অক্ষুণ্ণ রাখতে হয়। দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার দায়িত্ব তাঁরই দলের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তিনি সেইসব বিরোধের নিস্পত্তি করেন।

(৮) জাতির নেতা ঃ- প্রধানমন্ত্রী সমগ্র জাতির নেতা, জনমানুষের অভিপ্রায়  অনুধাবন ও জনমত উপলব্ধি করা এবং তা নিয়ন্ত্রন করা প্রধানমন্ত্রীর এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিত্ব সত্যনিষ্ঠা, সাহসিকতা, জনপ্রিয়তা বিভিন্ন প্রচারের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তার রাজনৈতিক কার্যকলাপ, ব্যক্তিত্ব এমনকি তাঁর চলাফেরা, পোশাক পরিচ্ছদ পর্যন্ত জনমনে কার্যকর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে 

(৯) উপসংহার ঃ- উপরিউক্ত আলোচনা থেকে একথা সহজেই প্রাতিয়মান হয় যে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা অত্যন্ত ব্যাপক। বর্তমানে জোট সরকারে চল হওয়ার ফলে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী তার বিচক্ষণতা, সমন্বয় সাধনকারী নেতৃত্ব ও যোগ্য ব্যাক্তিত্বের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে ।

 আমরা আজকে শিখলাম, ভারতের প্রধানমন্ত্রী কি কি সুবিধা ভোগ করে, তার নিয়োগ, বেতন সম্পর্কে। আশাকরছি আপনাদের পোস্টটি ভালো লেগেছে, এইরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট সবার আগে পেতে সাইটের উপরে টেলিগ্রাম ও whatsapp  এর লিঙ্কে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যান পোস্ট গুলি সবার আগে পেতে। ধন্যবান আপনার দিনটি শুভ হোক। 


No comments:

Post a Comment