Breaking




Tuesday, 2 January 2024

বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere in Bengali

বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere

বায়ু মণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere
বায়ু মণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere
সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রী,
আমরা আজ তোমাদের বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর গুলির সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। তোমরা অতি অবশ্যই নীচে দেওয়া সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ো যাতে এই টপিকটি থেকে আসা বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন গুলি খুবি সহজে উত্তর গুলি দিতে পারো। আমরা এই পোস্টটির মধ্যে বায়ু মণ্ডলের ৬টি স্তরের অবস্থান, গঠন, বৈশিষ্ট্য, বর্ণনা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য তথ্য গুলি দিলাম। 

বায়ু মণ্ডলের স্তর বিন্যাস

০১. ট্রপোস্ফিয়ার
এটি বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নীচের স্তর এবং ভূপৃষ্ঠের সব থেকে কাছের স্তর। 

শব্দের উৎপত্তি -
এই শব্দটি গ্রিক শব্দ Tropos – মেশানো বা অশান্ত এবং Sphere – অঞ্চল অর্থাৎ Troposphere -  মিশ্রিত বা অশান্ত অঞ্চল থেকে এসেছে। 

বিস্তার -
ভূপৃষ্ঠ থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় ১৬ থেকে ১৮ কিলোমিটার এবং মেরু অঞ্চলে প্রায় ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য
● এটি বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ঘন ও ভারী স্তর।
● এই স্তরে সাধারণ বিমানগুলি চলাচল করে।
● প্রায় ৭৫% বায়বীয় উপাদান যেমন - জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা, বিভিন্ন গ্যাস এই স্তরে অবস্থান করে।
● এই স্তরে মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি বায়বীয় গোলযোগ ঘটে বলে, একে ক্ষুব্বমণ্ডল বলা হয়।
● প্রতি কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর উষ্ণতা ৬.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হ্রাস পায়। 
● এই স্তরের উর্ধ্বসীমাকে ট্রপোপজ বলা হয়।  এখানে উষ্ণতার কোন পরিবর্তন হয় না।

০২. স্ট্রাটোস্ফিয়ার
ট্রপোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তরটি হল স্ট্রাটোস্ফিয়ার। 

শব্দের উৎপত্তি
শব্দটি গ্রিক শব্দ Stratos – শান্ত এবং Sphere – অঞ্চল অর্থাৎ Stratosphere – শান্ত অঞ্চল বা শান্তমণ্ডল থেকে এসেছে।  

বিস্তার
ট্রপোপজ থেকে ওপরে ৫০ কিমি পর্যন্ত এই স্তরটি বিস্তৃত। 

বৈশিষ্ট্য
● এই স্তরে জলীয় বাষ্প, মেঘ, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়, বৃষ্টি প্রভৃতি দেখা যায় না; তাই একে শান্তমণ্ডল বলা হয়।
● এই স্তরে বায়ুমণ্ডল শান্ত থাকায় জেট বিমানগুলি চলাচল করে।
● এই স্তরের মধ্যে ওজোনস্তর অবস্থান করে।
● এই স্তরের উর্ধ্বসীমাকে স্ট্রাটোপজ বলা হয়। 

০৩. মেসোস্ফিয়ার
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুমণ্ডলের তৃতীয় স্তরটিকে বলা হয় মেসোস্ফিয়ার। 

শব্দের উৎপত্তি
এই শব্দটি Meso – মধ্যভাগ এবং Sphere – অঞ্চল অর্থাৎ Mesosphere – মধ্যভাগের অঞ্চল। 

বিস্তার
ভূপৃষ্ঠের উপরিতলের ৫০ কিমি থেকে ৮০ কিমি পর্যন্ত এই স্তর অবস্থান করে। 

বৈশিষ্ট্য -
● এটি বায়ুমণ্ডলের শীতলতম অঞ্চল।
● এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায়।
● মহাকাশ থেকে ছুটে আসা উল্কাগুলি মূলত এই স্তরে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 
● এই স্তরের উর্ধ্বসীমাকে মেসোপজ বলা হয়।

০৪. থার্মোস্ফিয়ার
মেসোস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুমণ্ডলের চতুর্থ ও তাপময় স্তরটিকে বলা হয় থার্মোস্ফিয়ার বা তাপমণ্ডল। 

শব্দের উৎপত্তি -
শব্দটি Thermo – তাপ এবং Sphere – অঞ্চল অর্থাৎ Thermosphere – তাপ অঞ্চল বা তাপমণ্ডল থেকে এসেছে।

বিস্তার -
৮০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এই স্তরের বিস্তৃতি। 

বৈশিষ্ট্য -
● এই স্তরে নিম্নাংশে গ্যাসের অণুগুলি আয়নিত অবস্থায় থাকে, তাই থার্মোস্ফিয়ারের নীচের অংশকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয়। 
● এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতাও বৃদ্ধি পায়।

০৫. এক্সোস্ফিয়ার
থার্মোস্ফিয়ারের ওপরের স্তরটিকে বলা হয় এক্সোস্ফিয়ার।

শব্দের উৎপত্তি
শব্দটি Exo – বহিঃ এবং Sphere – মণ্ডল  অর্থাৎ Exosphere – বহিঃমণ্ডল থেকে এসেছে।  

বিস্তার -
থার্মোস্ফিয়ারের ওপরে প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য
● এই স্তরে হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়।
● এই স্তরে উষ্ণতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
● কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশ স্টেশন এই স্তরে থাকে। 

০৬. ম্যাগনেটোস্ফিয়ার
এক্সোস্ফিয়ারের ওপরে বায়ুমণ্ডলের শেষসীমা পর্যন্ত বায়ুস্তরকে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলে। 

বিস্তার
এক্সোস্ফিয়ারের ওপর থেকে বায়ুমণ্ডলের শেষ সীমা অর্থাৎ ১৫০০ থেকে ১০০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য
● এই স্তরের বায়ুমণ্ডল ইলেকট্রন ও প্রোটন দ্বারা গঠিত চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বেষ্টিত।

বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস PDF টি সংগ্রহ করতে নীচের Download Now-লেখায় ক্লিক করুন


No comments:

Post a Comment