Breaking




Tuesday, 28 June 2022

প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন গুলি কি কি

 প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন গুলি কি কি 

প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন গুলি কি কি
প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন গুলি কি কি
ডিয়ার ছাত্রছাত্রী.. 
আজকে তোমাদেরে প্রাচীন ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত শেয়ার করছি। আজকের সেই টপিকটি হল, প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন। তোমরা অবশ্যই খুব মনোযোগ সহকারে পড়বে এবং বন্ধুদেয় বেশি বেশি করে শেয়ার করো।

প্রাচীন কালে নদী মাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারন গুলি কি কি ?

❐ ভূমিকা ঃঃ আদিম মানুষের আকৃতিগত পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সভ্যতারও বিকাশ ঘটাতে থাকে। আগুন জ্বালাবার কৌশল জানার পর তারা কৃষি জীবিতে পরিণত হয়। তাম্র প্রস্তোর যুগের মানুষ কোনো না কোনো নদীর তীরে তাদের সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। যেমন ঃ- বালুচি নামক স্থানে বলান নদীর তীরে মেহেরগড় সভ্যতা, টাইগ্রিস ও উফ্রেটিস নদীর তীরে সুমেরু সভ্যতা, নীলনদের তীরে মিশরীয় সভ্যতা, সিন্ধু নদের তীরে সিন্ধু সভ্যতা এবং হোয়াংহো ও ইয়াংসিকিয়াং নদীর তীরে চীনের সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, নদী মাতৃক সভ্যতা গুলি গড়ে উঠেছিল কয়েকটি কারনে সে গুলি হল নিম্নরূপ- 

❐ উর্বর কৃষি জমি ঃঃ নদীর তীরবর্তী অঞ্চল গুলিতে প্রতিবছর বন্যায় পলিমাটিতে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। এই পলিমাটি হল কৃষিকাজের জন্য বিষণ ভাবে উপযোগী। নদীর জল দিয়ে জমিতে জলসেচের সুবিধা থাকায় মানুষ এখানেই বসতি গড়ে তোলে। এই জনবসতী সভ্যতার সূচনা করে।

❐ গৃহপালিত পশুর খাদ্যের সহজলভ্যতা ঃঃ কৃষিকাজের পাশাপাশি মানুষের অন্যতম প্রধান জীবিকা ছিল পশুপালন। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ঘাস গ্রহপালিত পশুর খাদ্যের যোগান মেটায়, ফলে গৃহপালিত পশুর খাদ্যের সুবিধা থাকায় নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে মানুষকে সভ্যতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

❐ পণ্য পরিবহণ ও যাতায়াতের সুবিধা ঃঃ নদী পথে মানুষ সহজে একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করত। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের জন্য নদীপথই ছিল সহজ ও নিরাপদ। ফলে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল সভ্যতা। এছাড়াও কৃষিকাজ শুরু করার পর উৎপাদিত শস্য ও অন্যান্য পণ্য দুর-দুরান্তে পাঠানোর জন্য নদীপথই ছিল সবচেয়ে উপযোগী।

❐ ব্যাবসা-বানিজ্যের সহায়ক ঃঃ নদী পথে জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার সুবিধা মানুষকে ব্যাবসা বানিজ্যে উৎসাহিত করে তুলেছিল, ফলে ব্যাবসা বানিজ্যের মতো জীবিকার মতো সহজ উপায় নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে মানুষকে বসতি গড়েতুলতে সাহায্য করেছিল।

❐ পানীয় জন ও খাদ্যের সুবিধা ঃঃ প্রাচীন কালে মানুষ নদীর জলকেই প্রাণীয় হিসাবে ব্যাবহার করতো। এছাড়া তারা নদীর মাছ ও অন্যান্য জীবজন্তুকে খাদ্য হিসাবে গ্রহন করত। প্রাণীয় জল ও খাদ্যের সহজলভ্যতার কারনে মানুষকে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস গড়েতুলতে সাহায্য করেছে।

❐ জলসেচের সুবিধা ঃঃ নদীর উপকূল অঞ্চলে চাষাবাদ করলে জলসেচের সুবিধা পাওয়া যায়। নদীতে বাঁধ দিয়ে এক সেখান থেকে খাল কেটে কৃষিজমিতে জলসেচ করা সম্ভব হয়। জলসেচের ফলে কৃষি উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। কৃষি উৎপাদনের সুবিধার্থে আদিম মানুষ দলবদ্ধ ভাবে বিভিন্ন নদীর উপত্যাকা অঞ্চলে বসতী গড়ে তুলেছিল।

❐ অধিক নিরাপত্তা ঃঃ আদিম যুগের শিকার, সম্পদ সংগ্রহ ও অন্যান্য কারনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যেই প্রায় সংঘর্ষ হত। তাই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর কাছে নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানুষ উপলব্ধি করেছিল যে জলভাগহীন বিস্তারিত স্থলভাগে বসবাস করলে যখন তখন অন্য গোষ্ঠী দ্বারা আক্রামন হওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু নদীর জলরাশি অতিক্রম করে আক্রমণ করা দুস্কর, তাই প্রাকৃতিক নিরাপত্তার কারনে মানুষ নদীরতীরে বসবাস করত।

❐ অনুকুল আবহাওয়া ঃঃ নদী বা বড়ো জলাশয়ের ধারের আবহাওয়া তুলনামূলক ভাবে আরামদায়ক হয়। জলরাশি থেকে দূরবর্তী স্থানে গ্রীষ্মকালে বেশি গরম হয় এবং শীতকালে বেশি শীত অনুভুত হয়, কিন্তু নিকটবর্তী অঞ্চলে আবহাওয়া সেই তুলনায় নাতিশীতোষ্ণ হয়। এই জন্য নদী বা বড়ো হ্রদের উপকূলে প্রাচীন মানুষ তাদের বসতী গড়ে তুলতে চাইত। 

-------- ধন্যবাদ --------

No comments:

Post a Comment