Breaking




Monday, 11 December 2023

একনজরে বেদ এবং বেদের ৪টি অংশ || একনজরে বেদের চারটি অংশ

একনজরে বেদ এবং বেদের ৪টি অংশ || একনজরে বেদের চারটি অংশ 

একনজরে বেদ এবং বেদের চারটি অংশ
একনজরে বেদ এবং বেদের চারটি অংশ 
বন্ধুগন,
বেদ সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই কিছুনা কিছু জানি বা কিছুটা হলেও ধারনা রয়েছে। তাই আজকে তোমাদের বেদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা তৈরি করার জন্য এই পোস্টটি তৈরি করলাম। তোমরা এই পোস্টটির মাধ্যমে বেদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা তৈরি হয়ে যাবে। আমরা এই পোস্টটির মধ্যে বেদ কাকে বলে? || ঋকবেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করলাম। 
সুতরাং আর সময় নষ্ট না করে মনোযোগ সহকারে নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে বেদ সম্পর্কে পোস্টটি পড়ে নাও।

☞ বেদ কি ? 
বেদ শব্দটি √বিদ্ ধাতু থেকে উৎপন্ন, যার উৎপত্তিগত অর্থ জ্ঞান। এ জ্ঞান কোন সাধারণ জ্ঞান নয়; এক অতীন্দ্রিয় অপৌরুষেয় জ্ঞান।বেদ হল প্রাচীন ভারতে লিপিবদ্ধ একাধিক গ্রন্থের একটি বৃহৎ সংকলন। বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত বেদই সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন এবং সনাতন ধর্মের সর্বপ্রাচীন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। 
সর্বপ্রথম অগ্নি, বায়ু, আদিত্য ও অঙ্গিরা এই চার ঋষি চার বেদের জ্ঞান প্রাপ্ত হন।

☞ বেদের অপরনাম শ্রুতি ঃ
 বেদকে শ্রুতি (যা শ্রুত হয়েছে) সাহিত্যও বলা হয়। কারণ বেদের লিখিত কোনো বই বা পুস্তক আকারে ছিল না। বৈদিক ঋষিরা বেদমন্ত্র মুখে মুখে উচ্চারণ করে তাদের শিষ্যদের শোনাতেন, আর শিষ্যরা শুনে শুনেই বেদ অধ্যায়ন করতেন, তাই বেদের অপরনাম শ্রুতি ।

☞ বেদের ভাগ ঃ 
 বেদের চারটি অংশ - ঋকবেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ। চারটি বেদ আবার চারটি ভাগে বিভক্ত - সংহিতা সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ্‌। 

☞ ঋকবেদ 

▣ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় রচিত পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থ।
▣ এটি হিন্দু ধর্মের চারটি মুখ্য গ্রন্থের মধ্যে একটি।
▣ এই গ্রন্থে ১০২৮টি শ্লোক মোট আটটি অষ্টকে বিভক্ত এবং প্রত্যেকটি অষ্টকে আটটি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে।
▣ প্রথম তিনটি বেদ (ঋক,সাম,যজু) কে একত্রে 'বেদত্রয়ী' বলা হয়।
▣ এতে অগ্নি , ইন্দ্র , মিত্র , বরুন এবং অন্যান্য দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত শ্লোক রয়েছে।
▣ চারটি বেদের মধ্যে ঋকবেদ সবথেকে প্রাচীন ধর্মীয় পাঠ ছিল বিশ্বে । সেই জন্য এই গ্রন্থ কে ''মানব জাতির প্রথম আইন'' বলা হত।
▣  ঋকবেদর শ্লোকগুলি যারা আবৃতি করতেন তাদের বলা হয় ''হোত্রী''

☞ সামবেদ

▣ সামবেদ হল ‘মন্ত্রবেদ’ বা ‘মন্ত্র-সংক্রান্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার’
▣ সামবেদের আগের নাম ছিলো 'সমন' যার অর্থ সুর। এর শ্লোকগুলিকে সামগান ও বলা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সামগানগুলি গাওয়া হত।
▣ সামবেদে মোট ১৮৭৫টি পদ্য রয়েছে যেগুলি প্রাথমিক ভাবে ঋকবেদ থেকে নেওয়া হয়েছে।
▣ সামবেদে স্বরলিপিভুক্ত সুর পাওয়া যায়। এগুলিই সম্ভবত বিশ্বের প্রাচীনতম স্বরলিপিভুক্ত সুর, যা আজও পাওয়া যায়।
▣ এই অংশের রচনাকাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ - ১০০০ অব্দের মাঝামাঝি কোনো এক সময়।
▣ সামবেদকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যকলার মূল বলে মনে করা হয়।

☞ যজুর্বেদ

▣ যজুর্বেদর রচনার সময়কাল ১২০০ খ্রীঃপুঃ - ১০০০ খ্রীঃপুঃ।
▣ ‘যজুস্‌’ শব্দের অর্থ “ধর্মানুশীলন, শ্রদ্ধানিবেদন, পূজা, যজ্ঞ, যজ্ঞে উচ্চারিত প্রার্থনা, পদ্ধতি, যজ্ঞের সময় অদ্ভুতভাবে উচ্চারিত নির্দিষ্ট মন্ত্র।
▣ যজুর্বেদকে দুটি অংশে ভাগ করা হয় - একটি হল কালো যজুর্বেদ (কৃষ্ণ) এবং আরেকটি সাদা যজুর্বেদ (শুল্ক)।
▣ কালো যজুর্বেদ হল ‘অবিন্যস্ত, অস্পষ্ট ও বিক্ষিপ্তরূপে সংকলিত’ এবং সাদা যজুর্বেদ হল সুবিন্যস্ত ,স্পষ্ট ও গোছাল।
▣ যজুর্বেদ সংহিতার আদি ও প্রাচীনতম অংশটিতে ১,৯৭৫টি শ্লোক রয়েছে।
▣ যজুর্বেদের আদি নাম ছিল যজুমশি। '' শতপথ ব্রাহ্মন'' যজুর্বেদের অংশ।

☞ অথর্ববেদ

▣ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ – ১০০০ অব্দ নাগাদ অথর্ববেদ রচিত হয়েছিল।
▣ এই বেদের আদি নাম অথর্বাঙ্গিরশ
▣ অথর্ববেদ হল ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের উৎস।
▣ ২০টি খণ্ডে বিভক্ত এই গ্রন্থে ৭৩০টি স্তোত্র/ শ্লোক ও প্রায় ৬,০০০ মন্ত্র আছে।
▣ বিভিন্ন তান্ত্রিক ক্রিয়া , মারন , উচাটন (কালাজাদু) আলোচিত হয়েছে এই শাস্ত্রে।
▣ অথর্ববেদের উপনিষদ্‌ বা শেষাংশ তিনটি প্রধান উপনিষদ্‌ নিয়ে গঠিত। এগুলির নাম হল মুণ্ডক উপনিষদ্‌, মাণ্ডুক্য উপনিষদ্‌ ও প্রশ্ন উপনিষদ্‌।
▣ প্রতিটি বেদের চারটি ভাগ রয়েছে - ১.সংহিতা ২.ব্রাহ্মন ৩.আরণ্যক ৪.উপনিষদ।


      আজকে আমরা খুবি সংক্ষিপ্ত আকারে বেদ এবং বেদের ৪টি অংশ সম্পর্কে জানলাম। তোমাদের পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই তোমাদের মতামত জানাবে। আর এই রকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্টগুলি সবার আগে পেতে সাইটের উপরে দেওয়া টেলিগ্রাম ও Whatsapp লিঙ্কে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও।ধন্যবাদ, তোমার দিনটি শুভ হোক।

No comments:

Post a Comment