Breaking




Wednesday, 25 August 2021

শ্বাসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব । Effects of exercise on the respiratory system.

 শ্বাসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব

 
শ্বাসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব
শ্বাসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব
বন্ধুগন,
 আমরা কমবেশি সকলেই ব্যায়ামে অভস্থ্য , এবং আমরা সকলেই জানি যে ব্যাম আমাদের শরীরের পক্ষে কতটা উপকার।তাই প্রতিদিন ব্যায়ামের অভ্যাসকে একটি সুঅভ্যাস বলা হয়।কিন্তু আমরা অনেকেই জানি বা অনেকে জানিনা যে ব্যায়ামের ফল স্বরূপ আমাদের শ্বাসনতন্ত্রের উপর কীভাবে প্রভাব করে। 
       তাই আমাদের আজেকে টপিক শ্বাসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব।সুতরাং আর কোনো রকমক সময় নষ্ট না করে জানে নেওয়া যাক কীভাবে ব্যায়াম আমাদের শ্বাসনতন্ত্রকে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রন করে।
 ভূমিকা 
 ব্যায়াম বা শারীরিক ক্রিয়াকলাপ শ্বাসনতন্ত্রের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে।ব্যায়ামের ফলে দেহের প্রতিটি অঙ্গের কোশ গুলিতে পুষ্টি ও অক্সিজেনের সরবরাহ হয়।রক্তে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং জীবনীশক্তি বৃদ্ধি পায়।শক্তি নির্ভর এবং সহনশীলতা নির্ভর জে-কোনো প্রশিক্ষণ জনিত অভিযোজনের ফলে শ্বাসনতন্ত্রের বিভিন্ন স্থায়ী পরিবর্তন লক্ষ করা যায় সেই গুলি হল নিম্নরূপ--------

ব্যায়াম চলাকালীন শ্বাসনতন্ত্রের পরিবর্তন 

ফুসফুসের আয়তন ঃ ব্যায়ামের সময় কলাকোশের মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায় তাই সেই চাহিদা পুরনের জন্য ও বেশি পরিমাণ গ্যাসীয় আদানপ্রদানের জন্য ফুসফুসের আয়তন বৃদ্ধি পায়।তাই আমরা বলতে পারি ব্যামের সময় ফুসফুসের আয়তন বৃদ্ধি পায়।

☞ বায়ুধারকত্ব ঃ গভীরতম প্রশ্বাসের পরে যে পরিমাণ বায়ু বলপূর্বক নিশ্বাসের মাধ্যমে ত্যাগ করা যায় তাকে বায়ুধারকত্ব বলা হয়।পুরুষদের বায়ুধারকত্বের পরিমাণ ৪.৮ লিটার এবং মহিলাদের বায়ুধারকত্বের পরিমাণ ৩.১ লিটার।প্রশিক্ষণের সময় ফুসফুসের বেশি পরিমাণে গ্যাসীয় আদানপ্রদানের ফলে বায়ুধারকত্ব বৃদ্ধি পায় এবং প্রশিখনপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের বায়ুধারকত্ব প্রায় ৫ লিটার।

☞ প্রবাহী বায়ুর পরিমাণ ঃ বিশ্রামরত অবস্থায় স্বাভাবিক প্রশ্বাস ও নিশ্বাসের সময় যে পরিমাণ বায়ু ফুসফুসে যায় ও বেরিয়ে আসে তাকে প্রবাহী বায়ু বলে।ব্যায়ামের সময় সাধারণ মানুষের প্রবাহী বায়ু ৫০০ মিলি থেকে প্রায় ২০০০ মিলি হতে পারে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের ৭০০ মিলি থেকে প্রায় ২৫০০ মিলি পর্যন্ত হতে পারে।

বক্ষ প্রসারণ ঃ ভারী পাল্লায় ব্যায়ামের ক্ষেত্রে বক্ষের বিভিন্ন পেশী , যেমন - ডায়াফ্রাম , এক্সটারনাল ইন্টারকস্টাল , ইন্টারনাল ইন্টারকস্টাল ইত্যাদির দ্বারা বক্ষ বেশি পরিমানে প্রসারিত হয়।

☞ অক্সিজেনের ব্যবহার ঃ সাধারণত বিশ্রামকালীন সময়ে মিনিটে ২০০-৩০০ মিলি অক্সিজেন ব্যবহৃত হয় , কিন্তু ব্যায়াম চলাকালীন এর পরিমাণ বেড়ে প্রায় ৪০০০ মিলি/মিনিট হয়।

 শ্বাসহার ঃ প্রশিক্ষণের সময় শ্বাসের গভীরতা ও হার উভয়ই বৃদ্ধি পায় । স্বাভাবিক অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্কদের শ্বাসহার থাকে মিনিটে প্রায় ১২-১৬ বার এবং ব্যায়াম চলাকালীন তা বেড়ে প্রায় ৩৫-৪০ বার হয়।

দীর্ঘকালীন ব্যায়ামের ফলে শ্বাসনতন্ত্রের পরিবর্তন 

☞ ফুসফুসের আয়তন ঃ ব্যায়ামের ফলে ফুসফুসে বেশি পরিমানে গ্যাসীয় আদানপ্রদান হয় এবং ফুসফুসের আয়তন ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।প্রশিক্ষণের ফলে ফুসফুসের বেশিরভাগ বায়ুথলি কার্যকরী হয় এবং ফুসফুসের সামগ্রিক আয়তন বৃদ্ধি পায় ।

 শ্বাসহার ঃ শ্বাসহার বলতে বোঝায় মিনিটে কতবার প্রশ্বাস ও নিশ্বাস কাজ চলে তা।সাধারণত সাধারণ মানুষের শ্বাসের হার হলো ১২-১৬ বার এবং ব্যায়ামের ক্ষেত্রে হয় মিনিটে প্রায় ২০ বার। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের ব্যায়ামের সময় মিনিটে ৩৫-৪০ বার হতে পারে ।

☞ প্রবাহী বায়ুর পরিমাণ ঃ প্রশিক্ষণের ফলে প্রবাহী বায়ুর পরিমান বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানুষের প্রবাহী বায়ুর পরিমাপ প্রায় ৫০০ মিলি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে প্রায় ৭০০ মিলি হয় । 

☞ মিনিট বায়ুচলন ঃ মিনিটে যে পরিমাণ বায়ু প্রশ্বাস ও নিশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহন বা বর্জন করা হয় তাকে মিনিট বায়ুচলন বলে । 
সর্বোচ্চ মিনিট বায়ুচলন
 
ব্যক্তি স্বাভাবিক মানুষ ব্যায়ামের সময়
সাধারন মানুষ ৫০০ মিলি ✖ ১৬ = ৮০০০ মিলি ২০০০ মিলি ✖ ২০ = ৪০,০০০ মিলি (৪০ লিটার)
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষ ৫০০ মিলি ✖ ১৬ = ৮০০০ মিলি ২৫০০ মিলি ✖ ৪০ = ১০,০০০ মিলি (১০ লিটার)

☞ ফুসফুসীয় ব্যাপন ঃ ফুসফুসের মধ্যস্থ বায়ুথলি ও রক্তজালকের মধ্যে যে গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটে তাকেই ফুসফুসীয় ব্যাপন বলে । ব্যায়াম বা প্রশিক্ষণের ফলে বায়ুথলি সক্রিয় হয় এবং আয়তন বৃদ্ধি পায় , যার ফলে ফুসফুসীয় ব্যাপন বৃদ্ধি পায়।

☞ অক্সিজেন গ্রহন ও ব্যবহারিক স্বক্ষমতা বৃদ্ধি ঃ সহনশীল নির্ভর প্রশিক্ষণে বিশ্রামকালীন ফুসফুসীয় বায়ুচলন হ্রাস পায় । সাধারণত ১ লিটার অক্সিজেন -এর জন্য ১৫ লিটার বায়ুর প্রয়োজন হয় । কিন্তু খেলোয়াড়রা ওই একই পরিমাণ অক্সিজেন ১২ লিটার বায়ু থেকে সংগ্রহ করতে পারে । খেলোয়াড়রা কম পরিমাণ বায়ু থেকে সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি পরিমাণ অক্সিজেন পেতে সক্ষম হয় । বিশ্রামকালীন সময়ে প্রশিক্ষিতদের একই কাজ করার জন্য কম বাতাস গ্রহন করে ।

 বায়ুধারকত্ব ঃ বায়ুধারকত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । সাধারণ মানুষের তুলনায় খেলোয়াড়দের প্রায় ১-২ লিটারের বেশি হয় অর্থাৎ বিশ্রামকালীন অবস্থায় খেলোয়াড়দের বায়ুধারকত্ব কমে প্রায় ৬ লিটার হয় ।
 
           আজকে আমরা তাহলে জানলাম ব্যায়ামের সময় আমাদের শ্বাসনতন্ত্র কীভাবে কাজ করে । তোমাদের পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই তোমাদের মতামত জানাবে । আর এই রকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট সবার আগে পেতে সাইটের উপরে দেওয়া টেলিগ্রাম ও Whatsapp লিঙ্কে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও । ধন্যবাদ , তোমার দিনটি শুভ হোক ।

No comments:

Post a Comment