।। একনজরে ভুমিকম্প ।।
আজকে আমরা জানবো এক আলাদা এবং গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে , আমরা জানবো ভুমিকম্প সম্পর্কে । যা আমরা নিজের নলেজ বাড়ানোর পাশাপাসি বাস্তব ধারনাকে মজবুত করতে সাহায্য করবে । আসুন আর বেশি সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়টি জেনে নিই ......
➬সংজ্ঞা➬
➬ ভূ-অভ্যন্তরে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম ভাবে সৃষ্টি হওয়া কোন কম্পন যখন আকস্মিকভাবে ভূপৃষ্ঠের কিছু অংশকে ক্ষণিকের জন্য প্রচন্ড বা মৃদু আন্দোলিত করে তখন তাকে ভূমিকম্প বলে। ভূপৃষ্ঠ থেকে সাধারণত 5-700 কিমি গভীরতায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৫ লক্ষ বার ভূমিকম্প হয়।
ভুমিকম্পের উৎসস্থলকে বলা হয় ফোকাস এবং ভুকম্পনের ফোকাসের লম্বা বরাবর পৃষ্ঠতলকে এপিসেস্টার বলা হয় । যখন ভুমিকম্পন হয় তখন এক তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাহাকে বলে ভূকম্পীয় তরঙ্গ । এই ভূকম্পীয় তরঙ্গ তিন প্রকার , যথা -------
(১) P - তরঙ্গ ঃ- প্রাথমিক তরঙ্গের (ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে পি-তরঙ্গ নামেও পরিচিত) গতিবেগ বেশি, ফলে এটি গৌণ তরঙ্গ থেকে দ্রুত ভূমিকম্প পরিমাপক কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছায়। অর্থাৎ এগুলিই প্রথমে ভূকম্পমাপক যন্ত্রে আবির্ভূত হয়, যার কারণে এদেরকে প্রাথমিক তরঙ্গ বলা হয়। প্রাথমিক তরঙ্গগুলি সংকোচক বা অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ নামেও পরিচিত। যেটা কঠিন , তরল ও গ্যাসীয় মাধ্যমে বিস্তার লাভ করিতে পারে ।
(২) S - তরঙ্গ ঃ- গৌণ তরঙ্গ (ইংরেজিতে সংক্ষেপে এস তরঙ্গ নামেও ডাকা হয়) কৃন্তন তরঙ্গ বা তির্যক তরঙ্গ নামেও পরিচিত। এই তরঙ্গগুলির কারণে কঠিন সঞ্চারণ মাধ্যমটি ভূমিকম্পের সঞ্চারণের দিকের সাথে লম্বভাবে উপরে-নিচে ওঠানামা করে। যখন তরঙ্গটি মাধ্যমের কোনও বিন্দুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এটির একবার উপরে, একবার নিচে কৃন্তন ঘটে। এগুলি ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট উচ্চ কম্পাংকের কিছু এই তরঙ্গসমুহ হল বিপরীত তরঙ্গ যাহা কেবল কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে বিস্তারলাভ করে।
(৩) L - তরঙ্গ ঃ- এই তরঙ্গ সমুহের দৈর্ঘ্য বেশি এবং নিম্ন কম্পাংক বিশিষ্ট যাহা ভূ-ত্বকের পৃষ্ঠে সীমাবদ্ধ থাকে । ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়ক্ষতির অধিকাংশ এই তরঙ্গ দ্বারা সৃষ্টি । ভুমিকম্পের তীব্রতার মান রিখটার স্কেলে মাপা হয় । C) পৃষ্ঠ তরঙ্গ বা পার্শ্ব তরঙ্গ-যে ভূকম্পীয় তরঙ্গ ভূপৃষ্ঠ বরাবর ঢেউয়ের মতো প্রসারিত হয়, তাকে পৃষ্ঠ তরঙ্গ বা পার্শ্ব তরঙ্গ বা L wave বলে। ১) পৃষ্ঠতরঙ্গ সর্বাপেক্ষা ধীরগতি সম্পন্ন, কিন্তু এর বিধ্বংসী ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। ২) এই তরঙ্গের গতিবিধি কঠিন মাধ্যমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
➬ ভারতের ভূকম্পন প্রবন অঞ্চল ঃ- ভারতীয় পাত দক্ষিণ থেকে উত্তরে সঞ্চালন হয় ৫ সেমি/বৎসর , এই গতিতে এবং ইউরেশিয়ান পাতটি নিজ অবস্থানে স্থিতিশীল থাকে । সেহেতু ভারতীয় পাতের সহিত ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষ ঘটে । ফলস্বরূপ ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে ভুমিকম্পের সৃষ্টি হয় । এই সংঘর্ষের ফলে হিমালয় পার্বত্যভূমির উচ্চতা বছরে ১ সেমি হারে বৃদ্ধি পায় ।
কাশ্মীরের অঞ্চল, পশ্চিম ও মধ্য হিমালয়, উত্তর ও মধ্য বিহার, উত্তর-পূর্ব ভারতীয় অঞ্চল, কচ্ছের রণ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এই জোনের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত, ট্র্যাপ শিলা বা ব্যাসল্টজাতীয় শিলা রয়েছে এমন অঞ্চলগুলি ভূমিকম্প প্রবণ হয়।
দ্বিতীয় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভুকম্প প্রবন অঞ্চলটি পাঞ্জাব এবং কচ্ছ রানের সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত । ইহা ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় পাত রূপান্তরিত সীমা রেখার আন্দোলনের প্রভাবে সৃষ্টি হয় ।
➬ভুমিকম্পের বিস্তার ঃ- পৃথিবীর অধিকাংশ ভুমিকম্প ঘটে এই অঞ্চলে -
● ইয়ং ফোল্ড মাউন্টিং জোনসমূহ ।
● ফোল্ডিং এন্ড ফল্টিং জোনসমূহ ।
● মহাদেশীয় এবং সামুদ্রিক সীমা অঞ্চল ।
● সক্রিয় আগ্নেয়গিরি অঞ্চল ।
● বিভিন্ন পাতের সীমারেখা অঞ্চল ।
➬চিরাচরিত ভুমিকম্পপ্রবন অঞ্চল ঃ-
● সারকাম প্যাসিফিক বেল্ট ( Cireum-pacific belt ) ।
● মধ্য মহাদেশীয় অঞ্চল ।
● মধ্য আটলান্টিক অঞ্চল ।
আজকে জানলাম ভুমিকম্প সম্পর্কে । আশাকরছি আপনারা অতি সহজেই বিষয়টি বুজতে পেরেছেন । যদি আপনাদের কোনো মতামত দেবার থাকে অবশ্যই দেবেন । এই রকম সুন্দর এবং উল্লেখযোগ্য পোস্টগুলি সবার আগে পেতে সাইটের উপরে দেওয়া টেলিগ্রাম এবং Whatsapp গ্রুপের লিঙ্কে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যান । ধন্যবাদ , আপনার দিনটি শুভ হোক ।
No comments:
Post a Comment