Breaking




Thursday, 22 July 2021

বক্সারের যুদ্ধ ।। The Battle of Buxar

।। বক্সারের যুদ্ধ ।।

বক্সারের যুদ্ধ ।। The Battle of Buxar
বক্সারের যুদ্ধ ।। The Battle of Buxar
বন্ধুগন ,
  আজকে আমরা জানবো খুবি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে , আজকে আমরা জানবো বক্সারের যুদ্ধ সম্পর্কে । আমরা জনবো বক্সারের যুদ্ধের ইতি কথা , ইতি কথা বলতে যুদ্ধের কারন , মানে কি কি কারনে বক্সারের যুদ্ধ হয়ে ছিলো , ফলাফল , ফলাফল বলতে আমরা জানবো এই যুদ্ধের ফলে আমারের কি কি উপকার বা কি কি ক্ষতি বা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়ে ছিল । আসুন ভূমিকায় বেশি সময় নষ্ট না করে । আসল বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক ।
➢ ভুমিকা➢ 
  ১৭৬০ খ্রিঃ ঘটেছিল নিঃশব্দ বিপ্লব কারন কোনো রক্তপাত ছাড়াই মিরকাশিম বাংলার নবাব পদে নিযুক্ত হন । মিরজাফরকে আসন থেকে সরিয়ে তার জামাতা মিরকাশিমকে আসনে বসান তৎকালীন ইংরেজ সরকার । তবে খুব শীঘ্রই ইংরেজদের সাথে মিরকাশিমের বিবাদ প্রকট হয়ে ওঠে যার চরম পরিণতি ছিল ১৭৬৭ খ্রিঃ বক্সারের যুদ্ধ। 
 ➢ কারন  
   বক্সারের যুদ্ধের কারন ততোটা জটিল নয় । মিরজাফরকে সরিয়ে ইংরেজ সরকার তার জামাতা মিরকাশিমকে বাংলার নবাব বানান । ইংরেজ সরকার ভেবেছিলো মিরকাশিম তাদের কথামতো চলবে , কিন্তু সেটা ঘটেনি । তাই এই যুদ্ধ ঘটে ছিলো । বিশেষ কারন গুলি নিম্নরূপ ----
(১) অর্থনৈতিক সংস্কার ঃ- মিরকাশিম বাংলার অর্থনৈতিক শক্তির বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যাবসাবানিজ্যিক কর বৃদ্ধি , দুর্নীতি গ্রস্থ কর্মচারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে যা ইংরেজ সরকার কখনোই মেনে নিতে পারেনি । যার ফলে এটি একটি যুদ্ধের মুখ্য কারন হয়ে ওঠে ।
(২) সৈন্যবাহিনীর সংস্কার ঃ- সামরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য মিরকাশিম স্ম্রু , মার্কার , জেন্টিল এই তিন ফরাসি সেনাপতিকে বাংলার সৈন্যবাহিনীতে নিয়োগ করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ইংরেজরা ভয় পেয়ে যায় । ফলে তারা বাংলার সঙ্গে লড়াই করতে ভয় পায়।
(৩) রাজধানী স্থানান্তর ঃ- ইংরেজদের প্রভাব থেকে রাজধানীকে মুক্ত করতে মিরকাশিম ইংরেজ দের না জানিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে স্থানান্তর করে , এতে করে তৎকালীন ইংরেজ সরকার ক্ষুব্ধ হয় । যার ফল স্বরূপ বক্সারের যুদ্ধের অন্যতম কারন হয়ে দারায়।
(৪) দস্তকের অব্যাহার বন্ধ ঃ- ইংরেজ কোম্পানি যে ছাড়পত্রের অধিকার ছিল টা অপব্যবহার শুরু হলে মিরকাশিম , পান , সুপারি ও দ্রামাকের  উপর ২.৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন এবং বাকি পন্যের উপর শুল্ক তুলেনেন । এই পদক্ষেপে কোম্পানির আর্থিক গতির অবনতি হয় । যা বিরোধের এক প্রধান কারন হয়ে দাঁড়য়।
(৫) ইংরেজ মনোভাবাপন্ন কর্মচারীদের বিতাড়ন ঃ- প্রশাসনিক ব্যাবস্থাকে শক্তিশালী গড়েতুলার জন্য দুর্নীতি গ্রস্থ ও ইংরেজ মনোভাবাপন্ন তিনি কর্মচারীদের তাড়িয়ে করেন মিরকাশিমের সঙ্গে এই পদক্ষেপ ইংরেজদের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। 
  ➢ ফলাফল   
    ১৭৬৪ খ্রিঃ মোঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং বাংলার নবান মিরকাশিমের মিলিত বাহিনীর সঙ্গে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে যুদ্ধ সংগঠিত হয় টা ভারত ইতিহাসের এক অন্যতম নিনায়ক যুদ্ধ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে , যার ফলাফল গুলি নিম্নে আলচিত হল ---
(১) ব্রিটিশ প্রভুত্বঃ- পলাশির যুদ্ধে জয়লাভ করে বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্বের যে সম্ভবনা  দেখা যায় বক্সারের যুদ্ধের জয়লাভ করে তাকে বাস্তবায়িত করে ইংরেজ কোম্পানি ।
(২) ভারতীয় শাসকদের অযোগ্যতা ঃ- বক্সারের যুদ্ধের শুধু মাত্র বাংলার নবাব পরাজিত হয়েছিলো তা না , তার সাথে অযোধ্যার নবাব ও মোঘল সম্রাটও পরাজিত হয় , আর এই পরাজয়ে বাংলা তথা ভারতীয় শাসক দের অযোগ্যতা প্রমান হয়।
(৩) নবাবের ক্ষমতা হ্রাসঃ- বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর বাংলার নবাবের ক্ষমতা চূড়ান্ত ভাবে হ্রাস পায় । এমনকি অযোধ্যার নবাব ও কোম্পানির নিয়ন্ত্রনের অধীনে আসে এবং সে সময় থেকে বাংলার নবাবরা কোম্পানির বৃত্তিভোগী নবাবে পরিনত হন।
(৪) কোম্পানির দেওয়ানি লাভঃ- বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর ইংরেজরা বার্ষিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময় বাংলা , বিহার , উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করেন । এই চুক্তি  অনুসারে কোম্পানির বাংলা , বিহার , উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব ভার পান । এই ভাবেই বনিকের  মানদণ্ড রাজদণ্ডের পরিনত হয় ।
(৫) শিল্প বানিজ্যের উপর কোম্পানির কর্তৃত্বঃ- বক্সারের যুদ্ধের পর বাংলার কুটির শিল্প বাঙ্গালীর ব্যাসাবানিজ্যের ধ্বংস করে ব্রিটিশরা এটি একচেটিয়া শিল্প বানিজ্যের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। 

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা বিস্তারিত ভাবে জানতে পারলাম বক্সারের যুদ্ধ সম্পর্কে । বন্ধুগন আপনাদের কেমন লাগলো মতামত অবশ্যই জানাবেন । ধন্যবাদ  

No comments:

Post a Comment