স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন | স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বক্তব্য
![]() |
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য 2024 |
বন্ধুগন,
এই বছর আমাদের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস,তাই ঐ স্বাধীনতা দিবসের দিন আমারা সকলেই পতাকা উত্তলন করে আমাদের দেশের প্রতি,পতাকার প্রতি, দেশের জন্য প্রাণদানকারী মহান ব্যক্তিবর্গের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করে থাকি। এই স্বাধীনতা নিয়ে অনেক ইতিকথা আছে, যেগুলি সম্পর্কে আমরা অনেকেই আছি যারা জানিনা। আমাদের জানা উচিত এই সমস্থ বিষয় গুলি সম্পর্কে, যাতে আমরা জানতে পারি আমাদের স্বাধীনতার পিছনে যাদের অবদান সব চেয়ে বেশি তাদের সম্পর্কে।
সুতরাং আর সমস নষ্ট না করে,দেশ কে সম্মান জানিয়ে। জেনে নেওয়া যাক ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ইতিকথা সম্পর্কে।
আজকের স্বাধীনতা দিবস
৭৭তম স্বাধীনতা দিবসের আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা দেশ। লালকেল্লা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি ভবন শহর, গ্রাম, ক্লাব, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সর্বত্র ত্রিবর্নে সেজে উঠেছে। ভারতীয় স্বাধীনতা দিবস হল ভারতের একটি প্রধান জাতীয় উৎসব। এই দিনটি 1947 সালে ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে চিহ্নিত করে যখন ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং একটি স্বাধীন জাতি হয়ে ওঠে।
স্বাধীনতা দিবসে, ভারত জুড়ে লোকেরা বিভিন্ন উদযাপনে অংশ নেয়। দিনটি পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয়, যেখানে জাতীয় পতাকা গর্বিতভাবে প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও কুচকাওয়াজ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে যা ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং একতা প্রদর্শন করে।
স্বাধীনতা দিবস গর্ব এবং প্রতিফলন উভয়ের জন্য একটি সময়। ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা অগণিত ব্যক্তিদের দ্বারা করা আত্মত্যাগকে সম্মান করার এবং স্মরণ করার এটি একটি সুযোগ। এই দিনে উদযাপন এবং ক্রিয়াকলাপ আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা এবং তারপর থেকে আমাদের জাতি যে অগ্রগতি করেছে তা উপলব্ধি করতে সহায়তা করে।
তাই আমরাও আজ দেশকে, দেশের পতাকা এবং অগনিত ব্যক্তিদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে বতী হয়েছি।
স্বাধীনতা লাভ
● ভারতের বিভিন্ন গণআন্দোলনের পর ব্রিটিশ সরকারের ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর ফলে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে পড়ে ফলে ব্রিটিশ সরকার খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অবশেষে ব্রিটিশদের হাত থেকে ১৯০ বছর পর ভারত স্বাধীনতা লাভ করে।
● ভারতীয় স্বাধীনতা বিল ১৯৪৭ সালের ৪ঠা জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হয় এবং তা ১৮ই জুলাই রাজকীয় সম্মতি লাভ করে।
● তারপর ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ব্রিটিশ সরকার ভারতকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন অর্থাৎ ভারত স্বাধীন হয়।
ভারতের জাতীয় পতাকা
● ত্রিবর্ণ জাতীয় পতাকায় গেরুয়া, সাদা ও সবুজ রং সমান্তরালভাবে ক্রমানুসারে উপর থেকে নিচে সমান আয়তনে ব্যবহৃত। পতাকার আকার এর ক্ষেত্রে এর চওড়া লম্বার তিনভাগের দুইভাগ হতে হয়। পতাকার কেন্দ্রে সাদার মধ্যে ঘন নীল রঙের অশোক চক্র রয়েছে। নিয়মানুযায়ী চক্রের ব্যাস সাদা রঙের অংশের সমান হতে হবে এবং ওই চক্রের ২৪ টি স্পোক থাকবে ।
● জাতীয় পতাকার মধ্যে অবস্থিত অশোক চক্রের ২৪টি স্পকের অর্থ - ১. ভালোবাসা ২. সাহস ৩. ধৈর্য ৪. শান্তি ৫. মহানুভবতা ৬. উদারতা ৭. বিশ্বাস ৮. নম্রতা ৯. পরার্থপরতা ১০. আত্মসংযম ১১.আত্মবলিদান ১২. সত্যবাদীতা ১৩. আন্তরিকতা ১৪. ন্যায়বিচার ১৫. করুণা ১৬. কমনীয়তা ১৭.নিরিহস্কারতা ১৮. বিশ্বস্ত ১৯. সহানুভূতি ২০. ক্ষমা ২১. ন্যায়পরায়নতা ২২. আধ্যাত্মিক জ্ঞান ২৩. নিত্যতা ২৪. আশা ।
● পতাকার গেরুয়া রঙ আমাদের দেশের অপরিসীম শক্তি এবং সাহসের প্রতীক ,সাদা রঙ শান্তি এবং সত্যকে বোঝায় এবং সবুজ বর্ণটি তিরঙ্গার নীচে থাকে। এই রঙটি জমির উর্বরতা, বৃদ্ধি এবং পবিত্রতার প্রতিনিধিত্ব করে।
● ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা করেছেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া।
● জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত নকশা টি ১৯৪৭ সালের ২২শে জুন গণপরিষদ এর সভায় অনুমোদিত হয়।
ভারতের জাতীয় প্রতীক
● ভারতের জাতীয় প্রতীক সারনাথের সিংহ চিহ্নিত অশোকস্তম্ভ থেকে নেওয়া হয়েছে।
● ১৯৫০ সালের ২৬শে জনুয়ারি ভারত প্রজাতন্ত্র দেশ হিসাবে ঘোষিত হওয়ার পর সরকারি ভাবে এই প্রতীক নেওয়া হয়।
● সারনাথের মূল অশোক স্তম্ভের চারটি সিংহ পিঠে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিচের আধারটি তে হাতি, ছুটন্ত ঘোড়া, ষাঁড় ও সিংহের রয়েছে। এই চারটি প্রাণীর রিলিফ কে পৃথক করতে তাদের মাঝে রয়েছে অশোক চক্র। এবং পুরো স্তম্ভটি রয়েছে একটি পদ্ম ফুলের উপর।
● সরকার যে প্রতীকটি গ্রহণ করেছে তাদের 4 এর বদলে তিনটি সিংহ দৃশ্যমান। চতুর্থ সিংহটি দেখা যায় না।
ইতিকথা
আমরা আজকে স্বাধীনতা দিবসের ইতিকথা গুলি প্রশ্নউত্তর আকারে জানবো । যাতে করে খুবি সহজে তোমরা বিষয় গুলি বুঝতে পার।
☞ কেন ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয় ?
➪ ১৯২৯ সালে জওহরলাল নেহরু কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে পূর্ণ স্বরাজের ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর আহ্বানে ২৬ জানুয়ারিকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণার কথা ছিল। ১৯৩০ সাল থেকে এ দিনটিকেই কংগ্রেস স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করত, যতদিন না ভারত স্বাধীনতা পায়। ১৯২৯ সালে জওহরলাল নেহরু কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে পূর্ণ স্বরাজের ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর আহ্বানে ২৬ জানুয়ারিকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণার কথা ছিল। ১৯৩০ সাল থেকে এ দিনটিকেই কংগ্রেস স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করত, যতদিন না ভারত স্বাধীনতা পায়।
☞ ১৫ অগস্ট কীভাবে ভারতের স্বাধীনতা দিবস হল ?
➪ লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আদেশপত্র দিয়েছিল তাতে বলা ছিল এই কাজ শেষ করতে হবে ৩০ জুন, ১৯৪৮-এর মধ্যে। এ ব্যাপারে রাজাগোপালাচারীর বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, ইংরেজরা যদি ১৯৪৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করত, তাহলে হস্তান্তর করার মতো কোনও ক্ষমতাই তাদের হাতে থাকত না। ফলে মাউন্টব্যাটেন সে কাজ এগিয়ে এনেছিলেন ১৯৪৭ সালের অগস্টে।
মাউন্টব্যাটেনের দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে ভারতের স্বাধীনতা বিল ব্রিটিশ হাউস অফ কমন্সে পেশ করা হয় ১৯৪৭ সালের ৪ জুলাই। দু সপ্তাহের মধ্যেই তা পাশ হয়ে যায়। এর ভিত্তিতে ভারতে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় এবং তৈরি হয় ভারত ও পাকিস্তান। এ দুই রাষ্ট্রকেই ব্রিটিশ কমনওয়েলথের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৫ অগস্ট লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।
২০২৪ স্বাধীনতা দিবস থিম
১৫ই আগস্ট, ২০২৪-এর ৭৭তম ভারতীয় স্বাধীনতা দিবসের থিম হল "ভিক্সিট ভারত" এই থিমটি ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার সরকারের লক্ষ্য প্রতিফলিত করে, যা স্বাধীনতার ১০০তম বছর চিহ্নিত করবে।
"ভিক্সিট ভারত" অবকাঠামো, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। লক্ষ্য ভারতের বৈশ্বিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা এবং প্রত্যেক নাগরিক যাতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং সামাজিক অগ্রগতি থেকে উপকৃত হয় তা নিশ্চিত করা।
থিমটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক অগ্রগতি এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিকে জোরদার করে , এমন একটি জাতিকে লালন করে যেখানে প্রতিটি নাগরিক উন্নতি করতে পারে।
থিমটি একটি সমৃদ্ধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত গড়ার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে, আধুনিক অগ্রগতিগুলিকে আলিঙ্গন করে এর সমৃদ্ধ ইতিহাস উদযাপন করে। এটি একটি শক্তিশালী, সমৃদ্ধিশীল জাতির দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দেয় যেখানে প্রত্যেকেরই সফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সভ্যগণকে এবং সমগ্র দেশবাসীকে ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আরেকবার শ্রদ্ধাপূর্বক শুভেচ্ছা জানাই।
জয় হিন্দ,
বন্দে মাতরম,
ভারতমাতার জয়।
No comments:
Post a Comment